সিনিয়র রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ:
গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদের মোরগ প্রতীকে সিল মারা ব্যালট পেপার ও প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষরিত রেজাল্ট শিট পাওয়া গেছে ধানক্ষেতে।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ঠাকুরপারা ভোটকেন্দ্রের পাশে ছাগল চড়াতে গিয়ে স্থানীয় কিছু তরুণ কুড়িয়ে পায় এসব কাগজ।
রবিবার অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে ভোটগণনা শেষে প্রথমে মোরগ প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে তার আধাঘণ্টা পর আবার ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী সেরাজুল ইসলামকে বিজয়ী ঘোষণা করেন প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ আখতার।
কুড়িয়ে পাওয়া এই ব্যালট পেপার ও রেজাল্ট শিট নিয়ে রিটার্নিং অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন মোরগ প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিন। করেছেন নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনও। যেখানে তিনি প্রিজাইডিং অফিসারের সহযোগিতায় ভোট কারচুপির অভিযোগ আনেন। এ ঘটনায় ঐ কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল আমিন জানান, উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নিবার্চন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন শেষে সাধারণ আসনের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিদের প্রাপ্ত ভোট ঘোষণা করেন প্রিজাইডিং অফিসার। সেখানে বলা হয়, আব্দুল মমিন তালা প্রতীকে ৩৮৭, নুরুল ইসলাম মোরগ প্রতীকে ৬১৭, শামছুল হক মোল্লা ফুটবল প্রতীকে ৪৮০ ও সেরাজুল ইসলাম ঘুড়ি প্রতীকে ৩৮৭ ভোট পেয়েছেন। তবে পুনরায় সেটি জালিয়াতি করে নতুন করে ভোট গণনার বিবরণী তুলে ধরা হয়। যেখানে দেখানো হয় আব্দুল মমিন তালা প্রতীকে ৩৮৭, নুরুল আমিন মোরগ প্রতীকে ৬১৭, শামছুল হক মোল্লা ফুটবল প্রতীকে ৪৮০ ও সেরাজুল ইসলাম ঘুড়ি প্রতীকে ৬৫৫ ভোট পেয়েছেন। সেরাজুল ইসলামকে জয়ী হিসেবে ডিক্লেয়ারও করা হয়।
আরও পড়ুন: রামপুরায় বাসচাপায় দুর্জয়ের মৃত্যুতে ম্লান ইউপি নির্বাচনে বোনের বিজয় আনন্দ
ঠাকুরপাড়া ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ আখতার বলেন, আমি প্রথমে যে রেজাল্ট শিট লিখেছিলাম তা ভুল হওয়ার কারণে সেটা ছিঁড়ে ফেলে নতুন করে রেজাল্টশিট লিখে ও ঘোষণা দিয়ে চলে আসি। তবে ধানক্ষেতে কিভাবে সিল মারা ব্যালট পাওয়া গেছে তা আমার জানা নেই। তবে রেজাল্ট শিট ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া আমার ঠিক হয়নি। আমি কোনো প্রার্থীর নিকট হতে আর্থিক সুবিধা নেইনি।
রাজাপুর ইউনিয়ন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ইলিয়াস হোসেন জানান, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা ও বিভিন্ন অভিযোগের জন্য নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। মোরগ প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আমার কাছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমরা প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ আখতারকে ডেকেছি। তার কাছ থেকে জানার পর নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে রিপোর্ট আকারে পেশ করবো। তখন নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল বিষয়টির সুরাহা করবে।
Leave a reply