ওমিক্রন আতঙ্কে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের নতুন তালিকা করলো ভারত। যাতে আবার উঠেছে বাংলাদেশের নাম। তালিকাভুক্ত দেশগুলোর যাত্রীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে পিসিআর (PCR) টেস্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে গত বুধবার (১ ডিসেম্বর) থেকেই বিমানবন্দরগুলোয় শুরু হয়েছে নমুনা পরীক্ষা। আলাদাভাবেও নানা কড়াকড়ি আরোপ করেছে কিছু রাজ্য।
এপ্রিল-মে’তে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াবহ রূপ দেখেছিল ভারত। রেকর্ড সংক্রমণ আর মৃত্যুর মিছিলে বিপর্যস্ত হয় রাজধানী দিল্লিসহ বেশ ক’টি শহর। ভয়াবহ দু’টি ওয়েভ মোকাবেলার পর এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আছে ভারতের মহামারি পরিস্থিতি। তাই ওমিক্রন নিয়ে কোনো ঝুঁকিই নিতে চায় না মোদি সরকার। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত এক যাত্রীর শরীরে শনাক্ত হয় করোনা। ওই ব্যক্তি ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কিনা তা জানা যায়নি এখনও। তবুও সতর্কতা অবলম্বন করেছে দেশটির সরকার। ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় থাকা দেশসমূহ থেকে আগতদের বিমানবন্দরেই করতে করবে নমুনা পরীক্ষা।
অমৃতসর বিমানবন্দরের পরিচালক ভি.কে. শেঠ বলেন, বিদেশ থেকে আগতদের ভাগ করা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ ও নিরাপদ ক্যাটাগরিতে। ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় থাকা দেশগুলোর যাত্রীদের পিসিআর টেস্ট করতেই হবে। বিমানবন্দরেই তাদের নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষা আর ফলাফল বের করা হবে।
আরও পড়ুন: বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট
ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকা থেকে শুরুতে বাংলাদেশকে বাদ দেয়া হলেও দু’দিন পরই আবার যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া, তালিকায় আছে ব্রিটেন’সহ ইউরোপের সব দেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, ব্রাজিল, চীন, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড ও ইসরায়েলসহ আরও কয়েকটি দেশ। ঝুঁকিপূর্ণ তালিকার বাইরের ৫ শতাংশ যাত্রীরও করা হচ্ছে কোভিড টেস্ট।
চেন্নাই, মুম্বাই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু-সব বিমানবন্দরেই দেখা গেছে বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের লম্বা লাইন। পিসিআর টেস্টের জন্য তাদের অপেক্ষাও করতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। নমুনা পরীক্ষায় অব্যবস্থাপনা নিয়ে আছে নানা অভিযোগ। ভুক্তভোগী এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, এখানে পুরো ব্যবস্থা বেশ ঝামেলার। ইউক্রেনে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করলেই চলে। আরেক যাত্রী বলেন, দুর্ভোগ হলেও আমাদের পরিস্থিতি বুঝতে হবে। সরকারের জারি করা নির্দেশনা মেনে সহায়তা করা উচিৎ।
যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসক শান্তনু হাজরা বলেন, নমুনা পরীক্ষা পদ্ধতি আরও দ্রুত করার উদ্যোগ নিতে হবে। টেস্টের হারও বাড়াতে হবে। দেশে ভাইরাস প্রবেশ করছে কিনা তা শুরুতেই শনাক্ত করা গেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
কেন্দ্রের নির্দেশনার বাইরেও বিশেষ সতর্কতা নিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য। বিদেশিদের জন্য দরজা বন্ধ করেছে সিকিম। কড়াকড়ি আরোপ করেছে তামিলনাড়ু প্রশাসনও।
আগামি ১৫ ডিসেম্বর থেকে সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর কথা থাকলেও সে সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন: ওমিক্রন আতঙ্কে ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহের তালিকা প্রকাশ করল ভারত
Leave a reply