প্রথমবারের মতো তৃতীয় লিঙ্গের বা হিজড়া সম্প্রদায়ের একজনকে টেলিভিশনের সংবাদপাঠক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে পাকিস্তান। অবশ্য, নিছক অনুকম্পা নয়, মারভিয়া মালিক নামের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষটির শিক্ষাগত যোগ্যতাও আছে। সাংবাদিকতায় স্নাতক পাশ করেছেন তিনি। করেছেন মডেলিংও।
সংবাদপাঠক হিসেবে নিয়োগ লাভের জন্য ৩ মাসের প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে মারভিয়াকে। শুক্রবার দেশটির বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘কোহিনূর নিউজে’ প্রথমবারের মতো সংবাদ উপস্থাপনা করে তাক লাগিয়ে দেন মারভিয়া। তাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিসিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম।
মারভিয়া মালিক বিবিসিকে জানান, তাকে যখন টেলিভিশন চ্যানেলের পক্ষ থেকে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয় তখন তিনি আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন।
তার কাজের মাধ্যমে পাকিস্তানে হিজড়া সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মারভিয়া। বলেন, পাকিস্তানে হিজড়াদের নানা ধরনের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। অর্থ উপার্জনের জন্য এদের অনেককে ভিক্ষাবৃত্তিতে ও পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়।
মারভিয়া বলেন, আমাদের সম্প্রদায়কে সমানভাবে দেখা উচিত এবং এখানে কোনো ধরনের লিঙ্গ বৈষম্য থাকা উচিত নয়। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে না দেখে হিজড়াদের সাধারণ নাগরিক হিসেবে দেখা উচিত বলে মন্তব্য করেন মারভিয়া।
হিজড়া হওয়ার কারণে পরিবার থেকে যে অবহেলা পেয়েছে সেটি স্মরণ করে মারভিয়া বলেন, আমার মডেলিংয়ে জড়িত থাকার কথা পরিবার জানতো এবং তারা এটাও জানে যে, আমি একজন সংবাদপাঠক হিসেবে কাজ করছি। এটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যুগ এবং এমন কিছুই নেই যা আমার পরিবার জানে না। কিন্তু এখনও তারা আমাকে তাদের পরিবারের একজন বলে পরিচয় দেয় না।
লিঙ্গের ভিত্তিতে নয় বরং মেধার ভিত্তিতে মারভিয়া মালিককে সংবাদপাঠক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোহিনূর টিভির মালিক জুনাইদ আনসারি।
এর আগে, চলতি মাসে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অধিকার রক্ষা সংক্রান্ত একটি বিল পাশ করে পাকিস্তানের আইনসভা।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply