দেখে মনে হবে সৈনিকদের প্রশিক্ষণ চলছে। না, কোনো সেনা প্রশিক্ষণ নয়, শেখানো হচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ইরান সীমান্ত পাড়ি দেয়ার কলাকৌশল। তালেবান ক্ষমতা দখলের পর, অবৈধভাবে অভিবাসনের এমন দৃশ্য এখন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে আফগান-ইরান সীমান্তে।
প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত পার হচ্ছেন হাজারো আফগান। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর, আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে এ সংখ্যা। ক্ষুধা, তৃষ্ণা আর জীবনের অনিশ্চয়তা কাটাতে দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগানরা। নরওয়ে ভিত্তিক শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা বলছে, গত তিন মাসে অবৈধ পথে ইরানে প্রবেশ করেছেন কমপক্ষে ৩ লাখ মানুষ।
অভিবাসনের ইচ্ছুক এক আফগান জানান, ইরানে যেতে চাই। এখানে কোনো কাজ নেই। দরিদ্রতা আমাদের নিত্যসঙ্গী। পরিবারের সবাই না খেয়ে আছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার ইরানে যাবার চেষ্টা চালিয়েছি। কিন্তু সফল হইনি। আজকে আবার চেষ্টা করে দেখি। আরেকজন অভিবাসনপ্রত্যাশী জানান, সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে একবার পায়ে গুলি খেয়েছি। সেসময় পালিয়ে আবার আফগানিস্তানে ফিরে যাই।
আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকেই সীমান্তে উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঢল। পরিসংখ্যান বলছে, গেল তিন মাসে তিন লাখের বেশি আফগান পাড়ি জমিয়েছে ইরানে। এখনও প্রতিদিন প্রায় ৪-৫ হাজার মানুষ ভিড় করছেন সীমান্ত এলাকাগুলোতে।
এক পাচারকারী জানায়, আগে সপ্তাহে ৫০-৬০ জনকে পার করতাম। কিন্তু তালেবান ক্ষমতা নেয়ার পর থেকে গেল তিন মাসে প্রায় ৫০০ পরিবারকে এই সীমানা পার করিয়েছি।
উল্লেখ্য, দুই দশকের অস্থিতিশীলতায় পার্শ্ববর্তী ইরানে প্রবেশ করেছে ৩০ লাখের বেশি আফগান। জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা বলছে, চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত অন্তত ১১ লাখ আফগান নাগরিককে ফেরত পাঠিয়েছে দেশটি।
Leave a reply