বগুড়ার এক সংগ্রামী শিক্ষক রত্না দেবনাথ

|

ছবি: সংগৃহীত

মেহেরুল সুজন:

বিয়ের মাত্র ৩ মাসের মাথায় স্বামীকে হারান ২৪ বছরের রত্না দেবনাথ। একাকী সংগ্রাম শুরু হয় বেসরকারি একটি সংস্থার শিক্ষা প্রকল্পে। এনজিও’র সেই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবার পরও দমে যাননি তিনি। বগুড়ার এরুলিয়া ইউনিয়নে নিভৃতে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে যাওয়া এই সংগ্রামী নারী পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে জড়ো করেন অভাব ও দরিদ্রতার কারণে বিদ্যালয়বিমুখ নানান বয়সী শিশুদের। কয়েক বছর ধরে তাদের পড়াচ্ছেন রত্না দেবনাথ।

বগুড়া সদরের হাপুনিয়া এলাকার পাকা সড়ক লাগোয়া দোচালা ঘর। বাইরে থেকে দেখতে যতোটা মলিন, ভেতরটা ততোটাই ঝলমলে জ্ঞানের আলোক রেখায়। অভাব, দারিদ্র্য কিংবা সামাজিক বাস্তবতায় বিদ্যালয় থেকে দূরে থাকা ত্রিশ জনের মতো বিভিন্ন বয়সী শিশুরা পড়ে এখানে। শিশুরা অক্ষরজ্ঞান থেকে শুরু করে প্রাথমিকের পাঠ নেয় এই নড়বড়ে ঘরে বসেই।

প্রায় দুই দশক একটি বেসরকারি সংস্থার শিক্ষা প্রকল্পে দরিদ্র শিশুদের পড়াচ্ছিলেন রত্না দেবনাথ। বছর কয়েক আগে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। ছেদ পড়ে হতদরিদ্র শিশুদের পড়াশোনায়। রিক্ত হাতেই তাদের পাশে দাঁড়ান রত্না, অদম্য স্বপ্ন বুকে নিয়ে।

কখনও পায়ে হেঁটে আবার কখনও রিকশায় বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে আসেন এই শিক্ষক। ঘড়ি ধরে সকাল ৯টায় হাজির হয় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিশুরা। এরপর দুপুর পর্যন্ত তাদের পড়ান তিনি। সামর্থ্য হলে কেউ মাসে রত্নার হাতে দুই/একশ টাকাও তুলে দেন। বেশিরভাগেরই নেই সেটুকুর সামর্থ্য।

বছর শেষে আশপাশের স্কুল ঘুরে পুরনো বই সংগ্রহ করেন রত্না। পুরনো সেই বইপত্রে শুরু হয় শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকা শিশুদের নতুন জীবনের যাত্রা।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply