ডা. মুরাদ যেন ক্লান্ত এক পথিক, সহসাই শেষ হচ্ছে দৌড়?

|

বিমানবন্দরে ডা. মুরাদ হাসান।

নানা ঘটনাপ্রবাহে এক সপ্তাহের মধ্যে আমূল বদলে গেছে তার জীবন। মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। হারিয়েছেন দলের পদও। অবস্থা বেগতিক দেখে দেশ ছেড়ে উড়াল দিয়েছিলেন সুদূর কানাডায়। সেখানে তাকে ঢুকতে দেয়া হলো না। ফিরতি পথে দুবাইয়ে ঠাঁই চেয়েছিলেন, মিললো না সেটিও। বাধ্য হয় দেশেই ফিরতে হলো ডা. মুরাদ হাসানকে। তিনি যেন এক ক্লান্ত পথিক।

রোববার বিকেলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্যামেরায় ধরা পড়লো ক্লান্ত, বিধ্বস্ত এক ডা. মুরাদ। যদিও তার চেহারায় দেখার উপায় নেই তেমন একটা। হুডি পরা, তার নিচে আবার ক্যাপ। মাস্ক দিয়েও মুখমণ্ডলের যতটুকু আড়াল করা সম্ভব তাই করে রেখেছেন। চোখের আড়াল তৈরি করা সেই চশমাই বরং তাকে শনাক্ত করছে সহজে। বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছেন, কারণে-অকারণে কথা বলতে পছন্দ করা মানুষটিকে অনেকটাই নীরব দেখা গেছে।

শনিবার সকালে জানা যায়, মুরাদ হাসান কানাডার বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে দেশটির বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি ঢুকতে দেয়নি। শুক্রবার দুপুর দেড়টায় মুরাদ টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তাকে জানানো হয়, সে দেশে তার প্রবেশের বিষয়ে অনেক কানাডিয়ান নাগরিক আপত্তি তুলেছেন। তারপর দুবাইগামী একটি প্লেনে তাকে তুলে দেওয়া হয়।

কিন্তু ভিসা না থাকায় তিনি আরব আমিরাতে ঢুকতে পারেননি। চেষ্টা করেও ব্যবস্থা করতে পারেননি ভিসা। পরে ব্যর্থ মনোরথে ফিরে আসেন বাংলাদেশে। ।

উল্লেখ্য, মুরাদ হাসান অশালীন, শিষ্টাচারবহির্ভূত ও নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য দিয়ে মন্ত্রিত্ব হারান। এছাড়া ৮ ডিসেম্বর (বুধবার) ডা. মুরাদ হাসানকে অশালীন ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) ডা. মুরাদকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়।

এরই মধ্যে, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করা হয়েছে দেশে। ফলে আগামীদিনগুলো খুব নির্বিঘ্নে পার হচ্ছে না তার এমনটা মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে। তার এমপি পদ থাকা না থাকা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আছে নানা গুঞ্জন। এমনকি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়টিও জোরালোভাবে আলোচনায় আছে।

প্রসঙ্গত, গত ১ ডিসেম্বর ফেসবুক লাইভে তৎকালীন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে। যা সমালোচনার ঝড় তোলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। প্রতিবাদ জানায় সাধারণ জনগণ থেকে বিভিন্ন সংগঠন। এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও। পরবর্তীতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সাথে তার কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হলে তৈরি হয় নতুন বিতর্ক। এর আগে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী থাকাকালেও নানান সময়ে বেফাঁস মন্তব্য করে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন ডা. মুরাদ হাসান।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply