বিশ্বাস ভঙ্গের মামলার আসামি ৮ বছরের শিশু!

|

বুধবার সকালে মায়ের সাথে আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলো চয়ন।

পটুয়াখালীতে প্রতারণা এবং বিশ্বাস ভঙ্গের একটি মামলায় আসামি করা হয়েছে ৮ বছর বয়সী শিশু চয়নকে। মামলার এজাহারে চয়নের বয়স দেখানো হয় ২২ বছর! এ মামলায় আসামি করা হয়েছে চয়নের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও।  

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করলে আবেদনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে চয়ন এবং তার বোন তৃপ্তি (১৭) কে তাৎক্ষণিক জামিন প্রদান করেন আদালত।

এর আগে শিশু চয়নসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ওই মামলার এজাহারে দাবি করা হয় যে, চয়নের পিতা মরহুম মাসুম তালুকদার কলাপাড়া উপজেলার লেমুপাড়া মৌজায় ১২ একর জমি বিক্রি করার জন্য ৮৪ লাখ টাকা নিলেও মৃত মাসুম তালুকদার জমির দলিল প্রদান করেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাসুম তালুকদারের ওয়ারিশদের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং বিশ্বাস ভঙ্গের মামলা দায়ের করেন মাসুম বিল্লাহ।

চয়নের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. সোলায়মান সিকদার জানান, গত ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর কলাপাড়া উপজেলার তুলাতলি এলাকার বাসিন্দা মাসুম তালুকদারের মৃত্যুর পর জনৈক মাসুম বিল্লাহ নামক এক ব্যক্তি মাসুম তালুকদারের ওয়ারিশদের নামে থাকা ৮৪ লাখ টাকা দাবি করে। দাবীর প্রেক্ষিতে এ বছরের ১২ আগস্ট পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলাও দায়ের করেন মাসুম বিল্লাহ। 

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই মামলায় শিশু চয়নের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ২২ বছর। অথচ জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটে দেখা গেছে চয়নের জন্ম তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৩। এছাড়া চয়নের বোন তুলাতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া ইমরোজ (তৃপ্তি)’র প্রকৃত বয়স ১৭ বছর হলেও এজাহারে তার বয়স ১৯ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া চয়নের মা, দাদিসহ ওই মামলায় মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়। 

এ ঘটনায় আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করলে আসামিরা আদালতে হাজির হন। বুধবার আসামি চয়ন এবং তার পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত হলে আদালতে এক বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। 

পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশিকুর রহমানের কাছে জামিনের আবেদন করলে বিচারক মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মইনুল হক তাৎক্ষণিকভাবে আসামি চয়ন এবং তৃপ্তিকে জামিন প্রদান পূর্বক বাদীপক্ষের আইনজীবীকে তলব করেন। 

এদিকে, শিশু চয়নের মা সাবরিনা বিশ্বাস বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমাদের হয়রানি এবং জমিজমা দখলের লক্ষ্যেই এ ধরনের মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মোহসীন উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে আদালতে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply