ফের বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম, জীবনযাত্রা ব্যাহত

|

ছবি: সংগৃহীত।

নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে আগুন। চালের দাম বেড়েছে মাসখানেক আগেই। আমনের ভরা মৌসুমেও কমার কোনো লক্ষণ নেই। নতুন করে কেজি প্রতি পাঁচ টাকা বেড়েছে মসুর ডালের দাম। সপ্তাহখানেক আগে বেড়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। এ অবস্থায় ডাল-ভাত আর আলুর ভর্তা খাওয়াও অনেকের জন্য কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কোনো না কোনো পণ্যের দাম বেড়েছে। তাই খুচরাতেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাজারে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়ে দাম উঠেছে ১৭০ টাকায়। বেড়েছে সোনালি জাতের মুরগির দামও। গত সপ্তাহে ২৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও আজ আকারভেদে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের ছুটির দিনে রাজধানীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, চালের বাজার আগের মতোই চড়া। অথচ সরকারি হিসেবে আমন ধান ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ কাটা হয়ে গেছে। সরু চাল মিনিকেট ও নাজির শাইল মানভেদে ৫৮ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

কৃষি বিপণন অধিদফতরের তথ্য বলছে, গত মাসের তুলনায় মিনিকেট চালের দাম কেজি প্রতি এক টাকা ৬৭ পয়সা বেড়েছে। অন্যান্য চালের দাম আগের মতোই রয়েছে। মোটা ও মাঝারি মানের চাল কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৫২ টাকা।

বাজারে বড় দানার মসুর ডাল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৮৫ টাকায়। দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ এই ডালের ওপর নির্ভরশীল। এর আগে গত বছর মে-জুনের দিকে করোনার সময় আমদানি-রফতানি ব্যাহত হওয়ায় এই মানের ডালের কেজি ৯০ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

গত বছরের শেষ দিকে দাম কমলেও চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে আবার বাড়তে থাকে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে, গত বছর এই সময় এই মানের ডালের দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। সে হিসেবে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশের বেশি। বেড়েছে ছোট দানার মসুর ডালের দামও। ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজির ডাল এখন ১০৫ থেকে ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

চলতি সপ্তাহে কেজি প্রতি পাঁচ টাকা করে বেড়েছে আটার দামও। প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহখানেক আগে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি। দুই কেজির প্যাকেটের গায়ের দাম ৯০ টাকা হলেও অনেক দোকানি পাঁচ টাকা ছাড়ে বিক্রি করছেন। খোলা আটার দাম অবশ্য সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই বাড়ছে। আগে ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা কেজি থাকলেও এখন ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দুই কেজি প্যাকেটের ময়দার দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভোজ্য তেল সয়াবিন কেজি বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দাম ১৫২ থেকে ১৫৫ টাকায়। খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩৮ থেকে ১৪২ টাকায়। চিনি আগের মতোই ৭৫ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে পেঁয়াজের এখন পাঁচটি ক্যাটাগরি হয়েছে। দেশি ছোট পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৬০ টাকা, মাঝারি আকারের ৭০ টাকা ও বাছাই করা বড় পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাবনার পেঁয়াজ খ্যাত দেশি আদি জাতের পেঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক কম, ৫০ টাকা কেজি। আদা ও রসুনের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। চায়না আদা ১২০ টাকা, দেশি ও ভারতীয় ১০০ টাকা কেজি। চায়না রসুন ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা ও দেশি রসুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply