ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বাসিন্দারা তাদের শিশু সন্তানকে স্কুলে পাঠাতেও ভয় পায় এখন। কারণ স্কুলে যাওয়ার পথে ফিলিস্তিনি শিশুদেরকে মৌখিক ও শারীরিক ভয় দেখাতে শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েলের সেনারা। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে জিয়াদ দ্বারামে নামে এক কিশোরের ঘটনা তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, অন্যান্য দিনের মতো ১৭ নভেম্বর স্কুলে যাওয়ার পথে আহত হয় সে। যে রাস্তা দিয়ে সে স্কুলে যাতায়াত করে সেই রাস্তায় ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনের শিকার হয় সে। আঘাত পায় চোখে, ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে।
হারেৎজ নামে এক ইসরায়েলি গণমাধ্যমকে জিয়াদ জানায়, কম করে হলেও ২০০ জনের বেশি ইসরায়েলি সেনা স্কুলে যাওয়ার রাস্তা আটকে দেয় এবং ফিলিস্তিনির অধিবাসীদের ওপর হামলে পড়ে। জিয়াদের মতো আরও যেসব শিশু সেদিন স্কুলে যাচ্ছিল তারাও ইসরায়েলি সেনার নিপীড়নের শিকার হয়। শিশুদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে রাবার বুলেট আর টিয়ার গ্যাস ছুঁড়তে শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। সেই রাবার বুলেট আঘাত করে জিয়াদকে।
ওইদিনের ঘটনায় প্রায় ৪০ শিশু ইসরায়েলি হানাদারদের বুলেটের আঘাতে আহত হয়। আরও ৬০ শিশু টিয়ারগ্যাসের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই পথ দিয়ে যাওয়া কোনো শিশুই সেদিন স্কুলে যেতে পারেনি বলে ফালাস্টিন নওবানিয়া নামের এক ভিলেজ কাউন্সিলের সদস্যের বরাতে জানিয়েছে হারেৎজ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওইদিন ১১ বছরের এক শিশুর মাথায় রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে যায় শিশুটি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে হারেৎজ পত্রিকাটি জানায়, ইসরায়েলি সেনারা প্রায়শই স্কুলে যাওয়ার পথে শিশুদের গালিগালাজ করে, অভিসম্পাত দেয় ও মারধর করে। শ্রেণিকক্ষে টিয়ারগ্যাস ছোড়ে, স্কুলশিক্ষকদের হয়রানি করে।
স্থানীয় কাউন্সিলের ভাষ্যমতে এ পর্যন্ত আটবার শ্রেণিকক্ষে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে যেতে বাধা দিয়েছে কম করে হলেও ৭৬ বার। এমনকি শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষ থেকে বের করে শিক্ষার্থীদের সামনেই হাঁটু গেড়ে বসতেও বাধ্য করে ইহুদিবাদীরা। শিশুদের সামনে গালিগালাজ করতে তরতে বলে, তোদের স্কুলের নাম হয়ে যাবে ব্রুকলিন, না হয় বনি ইসরায়েল। মূলত অবৈধভাবে পশ্চিম তীর দখলের অংশ হিসেবে ওসব স্কুল বন্ধ করার পায়তারা করছে দখলদার ইহুদিবাদীরা।
Leave a reply