২০২০ সালে ভারতে প্রতি ২৫ মিনিটে একজন গৃহিণী আত্মহত্যা করেছেন। দিনে গড়ে এই সংখ্যা ৬১। ভারতের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, গত বছর আত্মহত্যা করেছেন ২২ হাজার ৩৭২ গৃহিণী। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত সরকারের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর (এনসিআরবি) হিসেবে দেখা গেছে, দেশটিতে ২০২০ সালে ২২ হাজার ৩৭২ জন গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। ভারতে মোট আত্মহত্যার ১৪ দশমিক ছয় শতাংশই এরা।
তথ্য বলছে, পারিবারিক কলহ ও বিয়েসংক্রান্ত জটিলতায় এসব আত্মহত্যা ঘটেছে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আত্মহত্যার প্রধান কারণ পারিবারিক সহিংসতা। একটি সরকারি জরিপে ৩০ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, তারা স্বামীর নির্যাতনের শিকার। এছাড়া সংসারের দৈনন্দিন কাজ সম্পর্ককে অসহনীয় করে তোলে।
দেশটির উত্তরপ্রদেশের বারনাসীর মনোরোগ বিশেষজ্ঞ উশা বার্মা শ্রীবাস্তব বলেন, বেশিরভাগ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় বয়স ১৮ হওয়ায় পর পরই। সে তরুণী তখন হয়ে যায় কারও স্ত্রী, কারও পুত্রবধূ। তারপর সারা দিন কাটে তার গৃহস্থালির কাজে। আরোপিত হয় নানা বিধি-নিষেধ। ব্যক্তিস্বাধীনতা বিলুপ্ত হয়ে যায়। অর্থ উপার্জনের সুযোগ থাকে না বললেই চলে। এই পরিস্থিতিতে তার শিক্ষা এবং স্বপ্নগুলো হারিয়ে যেতে থাকে। জীবনের লক্ষ্য হারিয়ে হতাশার সাগরে নিমজ্জিত হয়ে যান তিনি। জীবন তখন বোঝা হয়ে দাঁড়ায়।
বয়স্কদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যার কারণগুলো ভিন্ন বলছেন ডা. উশা বার্মা। তিনি বলেন, সন্তানরা বড় হয়ে গেলে কিংবা বাড়ি ছেড়ে গেলে মায়েরা একাকিত্বে ভোগেন। একে বলা হয় এম্পটি নেস্ট সিনড্রোম বলে। এছাড়া অনেকেই পেরি-মেনোপজে ভোগেন, যা তাদের হতাশায় ডুবিয়ে রাখে, ছোট ছোট বিষয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সাল থেকে ভারতে আত্মহত্যাকারীদের তালিকা সংরক্ষণ করছে এনসিআরবি। প্রতি বছরেই গৃহবধূদের আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ২০ হাজারের বেশি। ২০০৯ সালে বছরওয়ারি এই সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছিল।
Leave a reply