‘প্রতিশোধ নিলে মসজিদ ও এলাকা ছেড়ে দেব’

|

রাম নবমীতে সংঘটিত সহিংস ঘটনায় মারা গেছে পুত্র সন্তান। কিন্তু প্রতিশোধ নিতে মানা করেছেন ইমাম মওলানা ইমদাদুল রশিদি। এমনকি এটাও বলেছেন, কেউ প্রতিশোধ নিতে গেলে তিনি মসজিদ ও এলাকা ছেড়ে চলে যাবেন।

শুক্রবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে অবস্থিত একটি মসজিদের ইমাম মওলানা ইমদাদুল রশিদি। তার ১৬ বছর বয়সী দশম শ্রেণির ছাত্র পরিক্ষার্থী সিবতুল্লাহ রশিদি চলতি বছরের বোর্ড পরীক্ষা দিচ্ছিল।

গত মঙ্গলবার আসানসোলের রেলপাড় এলাকায় সংঘটিত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ঘটনায় তাকে প্রথমে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন রাতে উদ্ধারের পর বৃহস্পতিবার স্বজনরা তার লাশটি সনাক্ত করে।

৪৮ বছর বয়সী মাওলানা রশিদি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “সে যখন বাইরে যায়, তখন গোলমাল চলছিল। তাকে একদল দুর্বৃত্ত তুলে নিয়ে যায়। আমার বড় ছেলে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেছিল। কিন্তু এ জন্য তাকে থানায় অপেক্ষা করতে হয়েছিল।”

তিনি  আরও বলেন, “পরে আমরা জানতে পারি পুলিশ একটি লাশ উদ্ধার করেছে। সকালে লাশটি সনাক্ত করা হয়।”

ইদগা ময়দানে সিবতুল্লাকে সমাহিত করতে জড়ো হয়েছিল হাজার হাজার মানুষ। ছেলেকে সমাহিত করার পর মওলানা রশিদি বলেন, “আমি শান্তি চাই। আমার সন্তান করে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমি চাই না, আর কোনো পরিবার তাদের প্রিয়জনকে হারাক। আমি চাই না, আর কোনো বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হোক।”

তিনি আরও বলেন, “ইতিমধ্যে আপনাদেরকে বলেছি, কোনো ধরনের প্রতিশোধ নেওয়া হলে আমি আসানসোল ছেড়ে চলে যাবো। যদি আমাকে ভালোবাসেন, তবে আপনারা একটি আঙ্গুলও তুলবেন না।”

চেতলাডাঙ্গা নদীর পাড়ে অবস্থিত নূরানি মসজিদের এই ইমাম বলেন, “আমি গত ৩০ বছর যাবত আপনাদের ইমাম ছিলাম। সে হিসাবে আপনাদের বার্তা দেওয়ার অধিকার আমার রয়েছে, আর সেটা হচ্ছে শান্তির বার্তা।

তিনি আরও বলেন, “আমি এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে চাই। আসানসোলের মানুষ সাম্প্রদায়িক নয়। এটি একটি ষড়যন্ত্র।”

আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “ক্ষুদ্ধ যুবকদের শান্ত করতে প্রশাসনকে বেশ সহায়তা করেছেন তিনি। আমরা তাকে নিয়ে গর্বিত। সন্তান হারানোর বেদনা সত্ত্বেও তিনি শান্তির আহবান জানিয়েছেন।”

যমুনা অনলাইন: এফএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply