ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নৃশংস ভাবে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত মিলন দাশ (২১) কে আটক করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে খুনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে আসামি মিলন দাশ।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ৯ টার দিকে প্রযুক্তির (মোবাইল ট্র্যাকিং) মাধ্যমে বাগডাঙ্গা রাস্তা পাড়া বাড়ির পাশ থেকে তাকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংএ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোটচাঁদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমিনুল ইসলাম।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, আটক মিলন দাশ উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের সলেমান আমিনের ছেলে স্কুল শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন খুনের প্রধান আসামি। বুধবার রাতে সে বাগডাঙ্গা গ্রামের ঝিঁনুর আম বাগানের পাশে রিয়াদকে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে কপোতাক্ষ নদে ফেলে দেয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে খুনের রহস্য ও লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে আসামি মিলন দাশ।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আসামী মিলন দাশ ও ভুক্তভোগী রিয়াদ খাঁন এক সঙ্গে মাদক সেবন করত। সে সুবাদে আসামির মায়ের সঙ্গে জনৈক ব্যক্তির অনৈতিক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের একটি ভিডিও ধারণ করে রিয়াদ। দীর্ঘদিন ধরে সেই ভিডিও দেখিয়ে আসামি মিলনকে ব্লাকমেইল করে আসছিল রিয়াদ। মিলন সে ভিডিওটি রিয়াদকে ডিলিট করতে বলে। এরপরও রিয়াদ সেই ভিডিওটি ডিলিট না করে তাকে নানা ভাবে ব্লাকমেইল করছিল।
এতে সে রিয়াদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এবং তাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার কথা ভাবে। যার ফলে বুধবার রাতে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং লাশ পানিতে ভাসিয়ে দেয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াদ হত্যার লোমহর্ষক বর্না দিয়েছে আসামি মিলন দাশ। পুলিশ জানায়, হত্যার পরিকল্পনায় আসামি মিলন দাশ তার মায়ের ব্যবহৃত একটি দা চৌকাঠে ধার দিয়ে ঘটনাস্থলে রেখে আসে। হত্যার রাতে সে রিয়াদকে মাদক সেবনের জন্য ডেকে নেয়। রাত ৯ টার দিকে আসামি ও ভুক্তভোগী দু’জনেই মাদক সেবন করে এবং রিয়াদকে অতিরিক্ত মাদক সেবন করায় মিলন। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত মাদক সেবনে রিয়াদ অচেতন হলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। এসময় রিয়াদ শরীরের শক্তি দিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালায় ও দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এবং উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
পুলিশ আরও জানায়, মিলন দাশের ধারালো দায়ের কোপে রিয়াদের একটি হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এক পর্যায়ে রিয়াদ দুর্বল হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মিলন দাশ রিয়াদের মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাকে জবাই করে এবং মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত করে নৃশংস ভাবে হত্যা করে পানিতে ফেলে রাখে।
পরদিন সকালে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা সলেমান খান বাদী হয়ে কোটচাঁদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার মূল আসামি মিলন দাশকে আটক করে।
আরও দেখুন- চেয়ারম্যান প্রার্থীর পোস্টারে প্রধানমন্ত্রীর নামের বানান ভুল!
এনবি/
Leave a reply