বিএনপি নেতারা চিরাচরিত মিথ্যাচারের অপরাজনীতিতে নিমগ্ন। তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রতিনিয়ত অপপ্রচারের আশ্রয় নিচ্ছেন। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যায়িত করে যে বক্তব্য দিয়েছেন- তা বাংলা সাহিত্যের আষাঢ়ে গল্পের মতো- বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের রণাঙ্গনে অংশ নেয়া নারী মুক্তিযোদ্ধা ও বীরঙ্গনাদের গৌরবগাথা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি কটাক্ষ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কারণ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিই বিএনপির শক্তির একমাত্র উৎস।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি- বিএনপি নেতারা এ ধরনের বানোয়াট গল্প থেকে বিরত থাকবেন। তাদের বোধোদয় হওয়া উচিত যে, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও জাতিদ্রোহী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার কারণেই বিএনপি জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা বিদেশে অর্থ পাচারের কথা বলেছেন। দেশবাসী জানে, এ অর্থ পাচারের মূল হোতা কারা? কারা হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। দুর্নীতিতে বারবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ও অর্থ পাচারকারীদের দল বিএনপি নেতাদের মুখে অর্থ পাচারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া কিছু নয়!
তিনি বলেন, বিএনপির শাসনামলে জার্মানির প্রযুক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স গ্রুপের কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুষ গ্রহণের কথা আদালতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে। একই সাথে চীনের হার্বিন কোম্পানির কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুষ কেলেঙ্কারির কথা সবাই জানে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও জিয়া পরিবারের দুর্নীতির চিত্র বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে খালেদা জিয়ার ছেলে কোকোর পাচার করা অর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই দেশে ফেরত আনা হয়েছে। বিএনপি নেতারা মুখে একদিকে অর্থ পাচারের কথা বলে অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থানরত তাদের নেতা সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনি আসামি তারেক রহমানের বিলাসী জীবনযাপনের রসদ প্রেরণ করেন। জনগণ জানে, বিএনপির সাজাপ্রাপ্ত নেতা, একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, সরকার বিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লবিস্ট নিয়োগে এবং বিএনপির মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্যের হাজারও কোটি টাকা দেশ থেকে কারা পাচার করছে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক সব সূচকেই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। জনগণের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দেশের টাকা দেশে আছে বলেই উত্তরোত্তর বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও সুশাসন আছে বলেই মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার ভয়াবহ আঘাতের মধ্যেও দেশের অর্থনীতির গতি সচল রয়েছে। আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো বিনির্মাণ এবং অগ্রগতির প্রশংসা করছে।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি এবং আগামী অর্থবছরে তা ৭ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়াবে বলে সাম্প্রতিক সময়ে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। অথচ বিশ্বসভায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই বিএনপি নেতাদের চোখে পড়ে না। আমরা বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাবো, অসংলগ্ন কথাবার্তা পরিহার করুন এবং সত্যকে স্বীকার করার সৎ সাহস নিয়ে গঠনমূলক বক্তব্য প্রদান করুন।
Leave a reply