প্রযুক্তির কল্যাণে সাড়ে তিন হাজার বছর পর উন্মোচিত হলো মিসরীয় ফারাও প্রথম আমেনহোটেপের মমি রহস্য। প্রাচীন কাপড় ও নানা অলংকারে মোড়ানো মমিটিকে পুরোপুরি অক্ষুণ্ণ রেখে, থ্রিডি কম্পিউটেড টোমোগ্রাফির মাধ্যমে এর শারীরবৃত্তীয় রহস্য উন্মোচন করা হয়।
গবেষকরা বলছেন, অন্যান্য ফারাওদের তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন পদ্ধতিতে করা হয়েছিলো আমেনহোটেপের মমি। যা, প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।
প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতা মানেই যেন, রহস্যে ঘেরা এক পৌরাণিক জগত। ১৯২২ সালে হাওয়ার্ড কার্টার, ফারাও সম্রাট তুতানখামেনের সমাধি আবিস্কারের পর, প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার গবেষণাকে নিয়ে যান অনন্য মাত্রায়। বিভিন্ন মিশরীয় শাসকের মমির সাথে সাথেই উন্মোচিত হতে থাকে একের পর এক রহস্য।
তবে ১৮৮১ সালে আবিস্কারের পরও দুর্বল কাঠামোর কারণে ফারাও আমেনহোটেপের মমি নিয়ে তেমন একটা গবেষণার সুযোগ পাননি ইতিহাসবিদরা। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে ১৪০ বছর পর কাটলো সে জটিলতাও। উন্মোচিত হলো প্রথম আমেনহোটেপের মমি রহস্য। থ্রিডি কম্পিউটেড টোমোগ্রাফির পুরো মমিটির ভার্চুয়াল চিত্র ফুটিয়ে তোলেন গবেষকরা। প্রক্রিয়া জটিল হলেও, অক্ষত রাখা হয়েছে মমিটিকে।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুরো মমিটি স্ক্যান করা হয়েছে। এরপর এক্সরে করে এর প্রতিটি অংশে থ্রিডি ইমেজ তৈরী করেছি আমরা। ফলে মমিটির সব তথ্য বের করা গেছে।
গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য হতবাক করেছে বিজ্ঞানীদের। খ্রিষ্টের জন্মের দেড় হাজার বছর আগে, সিংহাসনে থাকা আমেনহোতেপের মমির মুখে পড়ানো রয়েছে বিশেষ মুখোশ। এমনকি মমি করার সময় তার মস্তিষ্ক এবং হৃদযন্ত্রও বের করা হয়নি।
মৃত্যুর সময় আমেনহোটেপের বয়স ছিলো ৩৫ বছর। কিন্তু তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ ছিলেন। খুব সম্ভবত হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে তার। শরীরের ভেতরের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বের করা হয়নি যা অন্য ফারাওদের জন্য বাধ্যতামুলক ছিলো। এমনকি এটিকে আসিরিইয়ান ধাঁচে মমি করা হয়েছে। যেটা একেবারে নতুন একটা পদ্ধতি।
গবেষকরা বলছেন, আমেনহোটেপের মাধ্যমে ফারাওদের মমি তৈরির নতুন ধারার সূচনা হয় মিসরে। মমি থেকে প্রাপ্ত তথ্য সেই ইতিহাস খুজে পেতে বড় ধরনের সহায়তা করবে।
/এসএইচ
Leave a reply