‘জেল থেকে নুর হোসেন বলছি।’ এই নুর হোসেন নারায়ণগঞ্জের বহু আলোচিত সাত খুন মামলার ফাঁসির আসামি। যিনি এখন আছেন কনডেম সেলে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, কারাগার থেকেই ফোন করে ভাই-ভাতিজাদের নির্বাচন পরিচালনা করছেন নুর হোসেন। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় কাউন্সিলর প্রার্থী ও ভোটাররা। ঘটনার সত্যতাও পেয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা একসময় ছিলো অপরাধের স্বর্গরাজ্য। রাজত্ব করতেন বহুল আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি ও ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নুর হোসেন। যিনি এখন কাশিমপুর কারাগার-২ এর কনডেম সেলে।
নুর হোসেন কাউন্সিলর ছিলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। এবার সেখানে প্রার্থী তার ছোট ভাই নুর উদ্দিন। পাশের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে লড়ছেন তারই ভাতিজা শাহ জালাল বাদল। অভিযোগ রয়েছে, ভাই ও ভাতিজাদের মোবাইলে এলাকার মুরব্বী ও প্রভাবশালীদের জেল থেকে ফোন করছেন ফাঁসির আসামি নুর হোসেন। ফোন পেয়েছেন এমন কয়েকজনের সাথে কথা হলেও নিরাপত্তার কারণে ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি তারা। তবে অভিযোগকারীরা সম্প্রতি দেখা করেছেন বর্তমান কাউন্সিলর আরিফুল হক হাসানের সাথে। আরিফুল হক হাসান ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও প্রার্থী। তিনি জানালেন, এমন ঘটনা সাধারণ নাগরিকদের জন্য ভীতিকর।
ফোনের কথা জানাজানি হলে ভীতসন্ত্রস্ত সিদ্ধিরগঞ্জের ভোটাররা। রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন অন্য প্রার্থীরাও। ৪নং ওয়ার্ডের আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বললেন, যার পক্ষে জেল থেকে ফোন করা সম্ভব, তার পক্ষে হয়তো আরও অনেক কিছুই সম্ভব।
নুর হোসেন ফোন দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তার ছোট ভাই ও ভাতিজা কেউই ক্যামেরায় কথা বলেননি। তবে ফোনে তারা জানিয়েছেন, সবই অপপ্রচার।
নুর হোসেন যে নম্বর থেকে ফোন করেছেন, সেই নম্ববে কল দিতেই ট্রু-কলারে নাম আসে নুর হোসেন। একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য, ওই নম্বরের সবশেষ লোকেশন কাশিমপুর কারাগার। নুর হোসেনের কাছে ফোন আছে, এই তথ্য জানতে পেরে ৬ জানুয়ারি দুপুরে কনডেম সেলে অভিযান চালায় কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ। উদ্ধারও করা হয় ফোন। কাশিমপুর কারাগার-২ এর জেল সুপার এমএ জলিল জানালেন, শাস্তিস্বরূপ ২৪ ঘণ্টা ডান্ডা-বেড়ি পরিয়ে অন্য কনডেম সেলে রাখা হয়েছে তাকে।
ফোন উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। কীভাবে কনডেম সেলে ফোন গেল, কারা এর সাথে জড়িত সেটা খুঁজে বের করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
/এডব্লিউ
Leave a reply