লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
এক বছর আগে খুব ছোট অবস্থায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২টি শিয়াল শাবক কিনে পালন শুরু করেন বেদে বধূ হাসিনা আক্তার। এর কয়েকদিন পরই একটি মারা যায়। খুব আদর যত্নে অপর শিয়ালটিকে লালন করে বড় করে তুলেছেন। এই এক বছরে হাসিনার দুই প্রতিবন্ধী শিশুও শিয়ালটির বন্ধু হয়ে ওঠে৷ কিন্তু হঠাৎ করে বন বিভাগের লোকজন শিয়ালটিকে নিয়ে যাওয়ায় বেদে বধূ ও শিশুরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এমন ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর ফলকন গ্রামে। খাঁচায় বন্যপ্রাণী লালন-পালনের খবর পেয়ে শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ এসে শিয়ালটি নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, কেউ একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামানকে বেদে বধূর শিয়াল পালনের তথ্যটি দেয়। এতে ইউএনওর নির্দেশে বন বিভাগের লোকজন গিয়ে ওই বেদে বধূর বাড়ি থেকে খাঁচায় বন্দী শিয়ালটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পালিত শিয়াল নিয়ে যাওয়ার শোক সামলাতে না পেরে ওই নারীও বন কর্মকর্তাদের পেছন পেছন ছুটে আসে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে। তার সাথে প্রতিবন্ধী দুই শিশুও ছুটে আসে।
গৃহবধূ হাসিনা আক্তার জানান, এক বছর ধরে খুব যত্ন করে শিয়ালটিকে তিনি লালন করেছেন। শিয়ালটিকে সন্তানের মতোই তিনি আদর করতেন। সাবান মেখে গোসল করিয়ে দিতেন। আদর-যত্নে কখনো ত্রুটি ছিল না। সেই শিয়ালটিকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা তিনি মেনে নিতে পারছেন না। এতে কর্মকর্তাদের পেছন পেছন শিয়ালটিকে ফেরত নেয়ার আশায় ছুটে আসেন৷ শিয়ালটি তার দুই প্রতিবন্ধী শিশুর খেলার সাথীও বলে জানান তিনি।
উপজেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের জানান, খাঁচায় বন্যপ্রাণী লালন পালন করা অপরাধ। ইউএনওর নির্দেশে শিয়ালটি উদ্ধার করা হয়েছে৷ রাতে শিয়ালটিকে অবমুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন: বিজয়ী প্রার্থীর কান ছিঁড়ে দিলেন পরাজিত প্রার্থী
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, এক বছর ধরে শিয়ালটিকে ওই নারী লালন করেছেন। শিয়ালটির প্রতি তারা মায়া রয়েছে। আইনে অপরাধ হওয়ায় শিয়ালটিকে অবমুক্ত করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। ওই নারীকে বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
/এনএএস
Leave a reply