‘বাড়িতে করোনা, কলিং বেল বাজাবেন না’ ভোট প্রার্থীদের এড়াতে অভিনব কৌশল

|

পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগরে নির্বাচনী মাঠের উত্তাপ কেড়ে নিয়েছে করোনা। ছবি: সংগৃহীত

‘মাফ করবেন’ শহর থেকে গ্রামে ভিক্ষুকদের এড়াতে এমন বাক্য বহুল ব্যবহৃত। এবার সেই একই রকম কথা শুনতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের ‘ভোট ভিক্ষা’ চাওয়া রাজনৈতিক প্রার্থীদের।

কিন্তু ভোট চাইবেন কার কাছে? সব দ্বারই যে রুদ্ধ!

পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগরে ২২ জানুয়ারি ভোট তবে করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে, তাতে ভোট পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাই বলে বসে নেই প্রার্থীরা। তাই প্রচারে বের হচ্ছেন তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম এর প্রার্থীরা।

শুনশান বিধাননগরের রাস্তাঘাট। বন্ধ দরজার ভেতর থেকে বাসিন্দাদের বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘বাড়িতে করোনা। পরে আসবেন।’ দলীয় কার্যালয়েও কর্মীদের দেখা নেই। সবাই আতঙ্কে। প্রার্থীরাও ভাবছেন, বেশি মেলামেশা করলে ভোটের দিন পর্যন্ত সুস্থ থাকা যাবে তো!

আসলে বিধাননগরের অভিজাত পাড়াগুলোর অবস্থা এমনই। হালকা জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথায় ভুগছে বিধাননগরের বড় অংশ। করোনা কিংবা করোনা নয়— বিচার না করেই বাসিন্দারা সাবধানে থাকতে চাইছেন।

বিধাননগরের এক বাসিন্দা বলেন, এখন দুই ধরনের মানুষ। একদল পরীক্ষা করিয়ে করোনা পজিটিভ। আর একদল পরীক্ষা না করিয়ে করোনা নেগেটিভ।

এমনই পরিস্থিতির মধ্যে নির্বাচন চলছে বিধাননগরে। তবে সেই নির্বাচনের মাঠে উত্তাপ নেই। সেভাবে প্রচারেই বের হচ্ছেন না অধিকাংশ প্রার্থী।

এক বিজেপি প্রার্থী বলেন, শেষবার বাড়ি বাড়ি প্রচারের চেষ্টা করেছিলাম গত রোববার। পর পর তিনটি বাড়িতে কলিং বেল বাজাতেও দরজা খুলল না। উপরতলার কোনও একটি জানলা একটুখানি খুলে জানালেন, ‘বাড়িতে আমরা সবাই করোনা আক্রান্ত। পরে আসবেন।’ আরেক বাড়িতে বললো, ‘আমরা কেউ ভোট দেব না। মাফ করবেন।’ শুনে চলে এলাম। তার পর আর যাইনি।

ভোটের প্রচার বন্ধ করে দিয়েছেন বিধাননগরের তারকাপ্রার্থী সব্যসাচী দত্ত। সাবেক মেয়র গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হলেও এবার ৩২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূল প্রার্থী। শনিবার তিনি বললেন, প্রচারে বেরিয়ে মার খাব না কি! তা ছাড়া লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংক্রমণ ছড়া‌নো তো ঠিক নয়। আমি সুস্থ। কিন্তু ভয়ে পরীক্ষা করাচ্ছি না। যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে!

সাধারণ মানুষ যে ভোট দিতে বের হবেন না, এ বিষয়ে একেবারে নিশ্চিত বিজেপির রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্য। বিধাননগরের বিএইচ ব্লকের বাসিন্দা শমীক বলেন, আমিতো বারবার বলছি, এই পরিস্থিতিতে ভোট করা সম্ভব নয়। রাজ্য সরকার তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও সকলকে বাড়িতে থাকতে বলছেন। তা হলে ‘ভোট দিতে আসুন’ বলা যাবে কী করে?’’

আগামী ২২ জানুয়ারি বিধাননগরে পৌরসভা ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে। করোনা সঙ্ক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ভোটার এবং প্রার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তাই সবাই নিরাপদ থাকতে জনসমাগম এড়িয়ে চলছে।

এনবি/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply