ছয় থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হবে ইউরোপের অর্ধেকের বেশি মানুষ। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গুরুতর অসুস্থতা থেকে সুরক্ষায় টিকা নেয়ার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে সংস্থাটি। তবে স্বল্প বিরতিতে অতিরিক্ত ডোজ নেয়া নিয়েও সতর্ক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইএমএ। সংস্থাটি জানিয়েছে, একাধিক বুস্টার ডোজ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
চলতি বছরের প্রথম সপ্তাহে ইউরোপে নতুন সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছে ৭০ লাখ, যা আগের দু’সপ্তাহের তুলনায় দ্বিগুণ। ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে একের পর এক রেকর্ড। বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘পশ্চিম থেকে পূর্বে ওমিক্রনের জোয়ার’ আখ্যা দিয়েছেন ডব্লিউএইচও’র ইউরোপ বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা হান্স ক্লুগ। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, মাত্র দেড়/দু’মাসের মধ্যেই ইউরোপের ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ সংক্রমিত হবে এই ভ্যারিয়েন্টে।
হান্স ক্লুগ বলেন, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ার ৫৩টির মধ্যে ৫০ দেশেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এটি খুব সহজে মানবদেহে প্রবেশ করতে পারে। তাই ডেল্টাকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে প্রভাবশালী ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হচ্ছে ওমিক্রন। পশ্চিম ইউরোপে ওমিক্রন আক্রান্তই সবচেয়ে বেশি। বলকান এলাকায়ও দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্ট।
গুরুতর অসুস্থতা ঠেকাতে টিকার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে ডব্লিউএইচও। তবে যথেষ্ট গবেষণা ছাড়া চতুর্থ ডোজের বিষয়ে সতর্ক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইএমএ। সংস্থাটি জানায়, ঝুঁকিপূর্ণদের ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হলেও দীর্ঘমেয়াদে মহামারি দূর করতে কার্যকরী নয় এ কৌশল। বরং এতে স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দেখা দিতে পারে নানা শারীরিক জটিলতাও।
ইএমএ’র টিকা বিষয়ক প্রধান মার্কো ক্যাভালেরি বলেন, টিকার চতুর্থ ডোজ নিয়ে যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত এখনও নেই। এখানে রয়েছে দু’টি উদ্বেগের বিষয়; প্রতি চার মাস পরপর এভাবে টিকা দেয়া হলে মানুষের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। দ্বিতীয়ত, অবসাদসহ দেখা দেবে শারীরিক জটিলতা।
এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রতি একশো জন মানুষের জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ হয়েছে ১২৩ ডোজ টিকা। অথচ অসম বণ্টনের কারণে টিকার সিংহভাগই চলে গেছে উন্নত বিশ্বে। আফ্রিকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে অনেকে যখন ২ ডোজ টিকাও পায়নি, তখন ১০ গুণ দ্রুততায় বুস্টার ডোজ পাচ্ছে ধনীরা। এমনকি চতুর্থ ডোজও প্রয়োগ শুরু করেছে ইসরায়েল। তাদের অনুসরণ করেছে চিলি।
আরও পড়ুন: ‘বিধিনিষেধ আরোপের সর্বশেষ পদক্ষেপ হওয়া উচিত স্কুল বন্ধ করা’
Leave a reply