চিত্রনায়িকা শিমুকে হত্যা করে নিখোঁজের নাটক সাজাতে চেয়েছিলেন তার স্বামী। হত্যার পর, রাতভর লাশ পাহারাও দেয় সে। পরিকল্পনা ছিল, লাশ গুম করা অথবা অজ্ঞাত হিসেবে রাস্তায় ফেলে দেয়া। পুলিশের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে তা আর সম্ভব হয়নি। হত্যা ও গুমের কাজে সহায়তার জন্য স্বামী নোবেলের বাল্যবন্ধু ফরহাদকেও আটক করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, পারিবারিক কলহের জেরেই শিমুকে হত্যা করে তার স্বামী।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের হযরতপুর এলাকায় বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার হয়। যারা ফেলে যায়, তাদের পরিকল্পনাই ছিল লাশটি অজ্ঞাত থাকুক। বিপত্তি বাধে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের আধুনিক প্রযুক্তির কারণে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃতদেহের পরিচয় জানা যায়, তিনি ঢাকার চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু।
সুরতহাল দেখে এটি হত্যাকাণ্ড বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানায়, শিমু ও তার স্বামী অনেকটা বেকার ছিলেন। সাংসারিক টানাপড়েনে ঝগড়া লেগে থাকতো প্রায়ই। তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয় শনিবার (১৫ জানুয়ারি) মধ্যরাতে। একপর্যায়ে শিমুর গলা টিপে ধরেন নোবেল। নিস্তেজ হয়ে পড়েন শিমু। সারারাত পাহারা শেষে সকালে বাল্যবন্ধু ফরহাদকে এনে লাশ গুমের পরিকল্পনা করেন নোবেল। বাসার দারোয়ানকে বাইরে পাঠিয়ে, গাড়িতে তোলা হয় মরদেহ। এ দৃশ্য যাতে সিসি ক্যামেরায় ধরা না পড়ে, সেজন্য বন্ধ রাখা হয় মেইন সুইচ। ভিড়ের কারণে ফেলতে না পাড়ায়, মিরপুরের রূপনগর ও বেড়িবাধ ঘোরাঘুরি করে ফিরে আসেন বাসায়। শেষে রাত দশটার দিকে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর এলাকায় শিমুর লাশ ফেলে আসে তার স্বামী ও ফরহাদ।
পরবর্তীতে রাত ১২টার দিকে কলাবাগান থানায় জিডি করেন নোবেল। লিখেন, রোববার কাউকে কিছু না বলে কলাবাগানের বাসা থেকে বের হয়ে গেছেন শিমু। কিন্তু লাশ উদ্ধারের পর, শিমুর বাসায় তল্লাশি করে একগোছা সুতা উদ্ধার করে পুলিশ। যে সুতা দিয়ে লাশের বস্তা সেলাই করা হয়েছে। শিমুকে ফেলে আসার পর গাড়িটি পরিষ্কার করা হয় ব্লিচিং পাউডার দিয়ে। তল্লাশিতে ব্লিচিং পাউডারের গুড়াও পাওয়া গেছে। এরপর নোবেল ও ফরহাদকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে পুরো ঘটনা স্বীকার করে তারা।
Leave a reply