‘পরিবেশ নষ্টের ভয়ে’ মাদরাসা থেকে বের করে দেয়া হলো ধর্ষণের শিকার শিশুকে

|

নয় বছর বয়সী এক মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। এ ঘটনায় মামলা হলে এক পর্যায়ে গ্রেফতারও হয় অভিযুক্ত, এই মুহূর্তে ঘটনাটি বিচারাধীন। তবে ধর্ষণের শিকার হওয়ায় ভুক্তভোগী ওই শিশুটিকে ‘পরিবেশ নষ্ট হওয়ার ভয়ে’ প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিয়েছে রাজশাহীর উম্মাহাতুল মু’মিনীন মহিলা মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।

রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম এলাকার উম্মাহাতুল মু’মিনীন মহিলা মাদ্রাসা। সন্তানকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে এ প্রতিষ্ঠানে নয় বছর বয়সী মেয়েকে ভর্তি করেছিলেন অটোচালক বাবা আর পরিচ্ছন্নতা কর্মী মা। কিন্ত ভর্তির ৩ দিন পর তাদের সন্তানকে বের করে দেয় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। মেয়েটির মা জানান, গত বছরের ২১ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। মামলার পর ধর্ষক গ্রেফতারও হয়। ভর্তির পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ধর্ষণের ঘটনা জানতে পেরে শিশুটির ভর্তি বাতিল করে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়। শিশুটির বাবা জানালেন, পরিবেশ নষ্ট হওয়ার অজুহাত দিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে তার মেয়েকে।

সহায় সম্বলহীন বাবা-মায়ের সাথে রেলের জমিতে বসবাস করতো শিশুটি। ভর্তি বাতিল হওয়ার পর লোকলজ্জায় এখন তার ঠিকানা আত্মীয়ের বাড়ি। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট এই শিশুটি মেধাবী হওয়ায় তার নিয়ে স্বপ্নের অন্ত ছিল না বাবা মায়ের।

এদিকে উম্মাহাতুল মু’মিনীন মহিলা মাদরাসার পরিচালক মোহা. হাবিবুল্লাহর দাবি, প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও পরিবেশ নষ্ট হওয়ার ভয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। তিনি বলছেন, যখন শুনি কোনো পরিবার পরিবেশ নষ্ট করতে পারে, তাদের মেয়েকে আমরা রাখি না।

আর এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হবিবুর রহমান বলছেন, এমন পরিস্থিতি থেকে আসা একটি শিশুকে মাদরাসা থেকে বের করে দিয়ে চরম অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শিশুটিকে আবার একটি মানসিক চাপে ফেলা হয়েছে।

অধ্যাপক হাছানাত আলী বলছেন, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ শাস্তিযোগ্য একটি কাজ করেছে। তাদের উচিত ছিল শিশুটির পাশে দাঁড়ানো। তারা বিপরীত কাজ করেছে।

এ নিয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি না হলেও স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে তারা।

/এডব্লিউ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply