করোনা নীতিমালায় ক্ষুব্ধ ইউরোপ থেকে আমেরিকা- সব অঞ্চলের মানুষ। ভ্যাকসিন বিরোধী অবস্থানে রয়েছে ক্ষুব্ধ মার্কিনীরা। অন্যদিকে, ব্রাসেলসে জোটবদ্ধ হয়েছেন গোটা ইউরোপের বিক্ষোভকারীরা। এই সংঘাতে আহত ১৫ এবং আটক হয়েছেন কমপক্ষে ৬০ জন। তাদের সবার অভিযোগ হচ্ছে, টিকাগ্রহণ বাধ্যতামূলক করে ন্যূনতম মানবাধিকার কেড়ে নিচ্ছে সরকার। স্বাস্থ্যসেবার নামে মানুষকে বানানো হচ্ছে হাতের পুতুল।
ব্রাসেলসের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দফতর। টিকা আর করোনা স্বাস্থ্যসেবার গাফিলতির ক্ষোভ পুরোটাই আন্দোলনকারীরা রোববার (২৩ জানুয়ারি) উগড়ে দিলেন কূটনীতিক ভবনে। ব্রাসেলসের রাস্তায় এদিন নামে ২০ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের আক্রোশ, ভাঙচুর ও সরকার বিরোধী আন্দোলন মোকাবেলায় শক্ত পদক্ষেপ নেয় নিরাপত্তা বাহিনীও। টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ছোঁড়ার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ।
এক আন্দোলনকারী বলেন, আজকের সমাবেশে ভ্যাকসিন বিরোধী আন্দোলন পেলো আন্তর্জাতিক গতি। বিক্ষোভকারীরা এসেছেন হল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি থেকে। শুধু পোল্যান্ড থেকেই ১৫টি বাস পৌঁছেছে। সবার মতামত একই, এবং তা হচ্ছে সরকার কেড়ে নিচ্ছে আমাদের অধিকার, স্বাধীনতা।
আন্দোলনে উপস্থিত আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, সবাই পরীক্ষাগারের গিনিপিগ। মনেপ্রাণে নিজের অধিকার ফিরে পেতে চাই। বস্তিবাসী থেকে টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে রয়েছেন ধনী-অভিজাত পরিবারের সদস্য। বিশ্বের অর্ধকোটি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন করোনায়। কী হচ্ছে টিকাদানে?
‘ডিফিট দ্য ম্যান্ডেট’ স্লোগানে ছুটির দিনে মুখরিত হয়েছিল মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি। সাধারণ মানুষের সাথে বিক্ষোভে যোগ দেন বহু চিকিৎসক আর তারকারাও। তাদের অভিযোগ, সরকারের মহামারি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ পুরোপুরি ব্যর্থ। সে কারণেই, এতো বিপুল প্রাণহানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।
ওয়াশিংটনে ভ্যাকসিন বিরোধী আন্দোলনকারী ডক্টর রিচার্ড উরসো বলেন, আজ আপনাদের কাতারে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার চিকিৎসক। সংখ্যাটি জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর, সিডিসি বা এফডিএ কর্মীদের তুলনায় অনেক বেশি। ক্ষমতা বিবেচনায় তারা শক্তিশালী। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করায় আমাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। উইকিপিডিয়া থেকে মুছে ফেলা হয়েছে সব তথ্য।
আরও পড়ুন: করোনা বিধিনিষেধ বিরোধী আন্দোলনে রণক্ষেত্র বেলজিয়াম
ভ্যাকসিন বিরোধী আন্দোলন নিয়ে ডক্টর পিয়েরে কোরি বলেন, আমরা তথ্যযুদ্ধের মধ্যে রয়েছি। সঠিক তথ্য ছড়ানোর জন্য সাধারণ মানুষের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ, গণমাধ্যমের ওপর সেন্সরশিপ দিয়ে বা অপপ্রচার চালিয়ে সরকার মানুষকে হত্যা করছে। ভ্যাকসিনের কোনো বিকল্প নেই- এই শ্লোগানের মাধ্যমে রীতিমতো মগজ ধোলাই করছে তারা।
গেলো তিনদিনেই সারা বিশ্বে শনাক্ত হয়েছে কোটির কাছাকাছি সংক্রমণ। সবচেয়ে বেশি প্রকোপ ইউরোপ-আমেরিকায়। অথচ, দুটি মহাদেশের বেশিরভাগ রাষ্ট্রে প্রয়োগ করা হচ্ছে ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ।
Leave a reply