সময়টা ২০১৪ সাল, চলছিল ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার সিরিজ। আকস্মিক সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় জানান ভারতের অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনি। সহ-অধিনায়ক ভিরাট কোহলিকেই তখন করা হয় অধিনায়ক।
নেতৃত্ব পেয়ে ভিরাট বলেছিলেন, যদি আপনি কোনো টেস্ট ম্যাচ জিততে চান তবে আপনাকে অবশ্যই প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেয়া লাগবে, আর তাই আমি ৫ জন বোলার নিয়েই খেলবো। তিনি আরও বলেছিলেন, আমি এমন এক দল বানাতে চাই যারা অন্তত ৫ বছর পুরো বিশ্বে দাপট দেখাবে।
র্যাংকিংয়ে ৭ম স্থানে থাকা দলের অধিনায়ক যখন এমন কথা বলেন, তখন সেটা হাস্যকর শোনাতে পারে। তবে কথাটা যেহেতু ভিরাট বলেছেন, ফলে কাজেও যে তার প্রমাণ রাখবেন, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
ঘরের মাঠে একের পর এক সিরিজ জেতা ভারত পরের মাঠে নিয়মিত জিততে শিখেছে তার নেতৃত্বেই। যে ভারতের কাছে এশিয়ার বাইরে ড্র করাই ছিল সাফল্যের মতো তাদের নিয়েই ভিরাট জিততে শিখেছেন নিয়মিত। সিরিজ না জিতলেও অন্তত ম্যাচে জয় ছিনিয়ে আনতে ঠিকই পেরেছে ভিরাট কোহলির ভারত। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেও যে টেস্ট জেতা যায়, ভারতকে এটা কোহলিই শিখিয়েছেন।
ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের যুগে যেখানে বেশিরভাগ ক্রিকেটারদের মধ্যেই আগ্রহ টি-টোয়েন্টি, সেখানে ভিরাট কোহলি সবসময়ই বলে এসেছেন টেস্ট ক্রিকেটই আসল ক্রিকেট। ক্রিকেটের সৌন্দর্য এই সাদা পোশাকের মধ্যে। কোহলির কারণেই যে এ প্রজন্ম টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা ধরে রাখতে পেরেছে, সেটা অকপটে স্বীকার করেছেন অসংখ্য কিংবদন্তি ক্রিকেটারই।
সাদা বলের ক্রিকেটে ভিরাট কোহলিকে ব্যর্থতার ট্যাগ লাগিয়ে দিলেও সাদা পোশাকের ক্রিকেটে যে বিরাট কোহলি এশিয়ার ইতিহাসের সেরা অধিনায়ক সেটা তার পরিসংখ্যানই বলে দেয়। অধিনায়ক হিসেবে এশিয়ার টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি জয় পাওয়া ভিরাটের ৬৮ ম্যাচের ৪০টিতেই জয়। ১৭টিতে হারলেও ড্র করেছেন ১১ ম্যাচে।
৫ জন বোলার নিয়ে টেস্ট ম্যাচ খেলতে চাওয়া কিংবা অন্তত ৫ বছর টেস্ট ক্রিকেটে দাপট দেখানোর স্বপ্ন দেখা কোহলির বড় অর্জনটা তাহলে কী? এমন বিতর্কে কোহলির জবাব মাঠেই; প্রতিপক্ষকে সবচেয়ে বেশিবার ২০০ বা তার নিচে অলআউটের রেকর্ড তার টিমের এবং তার নেতৃত্বেই ৫ বার টেস্ট ম্যাচ জয় করেছে ভারত।
কোহলি দায়িত্বে এসেছিলেন অপ্রত্যাশিতভাবে, তার দায়িত্ব ছাড়াটাও ছিল অপ্রত্যাশিত। এর মধ্যে যা অর্জন, তাতে তাকে এশিয়ার সর্বকালের সেরা অধিনায়ক বললে মোটেই অত্যুুক্তি হবে না।
/এডব্লিউ
Leave a reply