নির্বাচন শেষ এক সপ্তাহ আগেই। কিন্তু ভোটযুদ্ধ শেষ হলেও এ নির্বাচনের নাটকীয়তায় সমাপ্তি আসছে না। শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শিল্পী সমিতি নির্বাচনের আপিল বোর্ড জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করেন। আর তাতে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করা আরেক প্রার্থী নিপুন জয় পেলেও এই পর্যন্ত আসা এ অভিনেত্রীর জন্য সহজ ছিল না। একের পর এক সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিপুন ছিলেন নাছোড়বান্দা।
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ভোটযুদ্ধে ১৩ ভোটের ব্যবধানে জায়েদ খানের কাছে হেরেছিলেন নিপুন। তবে, নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেননি ১৬৩ ভোট পাওয়া নিপুন। ভোটের পরদিনই নির্বাচন কমিশনের কাছে আপিল করেন এ অভিনেত্রী। ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুন প্যানেলের অভিযোগ ছিল, সদস্য পদে ১০টি ভোট বাতিল হলেও ওই পদের ক্ষেত্রে ২৬টি ভোট বাতিল হওয়া নিয়ে। কিন্তু পুনরায় ভোট গণনায় জয়ী হন জায়েদ খান।
এর একদিন পর রোববার (৩০ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুন প্যানেল। ওই সংবাদ সম্মেলনে নিপুন নির্বাচনের নানা অনিয়ম তুলে ধরেন। পাশাপাশি কথোপকথনের বিভিন্ন স্ক্রিনশটের ছবি দেখানো হয়। নিপুন দাবি করে, ওইসব কথোপকথনের স্ক্রিনশটের একপ্রান্তে ছিলেন জায়েদ খান। যদিও এর পরপরই সাংবাদিকদের জায়েদ খান জানিয়েছিলেন, স্ক্রিনশটগুলো সুপার এডিটেড।
ওই সংবাদ সম্মেলনে একটি ভিডিও দেখিয়ে বলা হয়, জায়েদ খান ভোটারদের টাকা দিচ্ছেন। এই অভিযোগের বিষয়ে জায়েদ খানের ভাষ্য, তিনি লিফলেট দিয়েছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আদালতেও যাওয়ার ঘোষণা দেন নিপুন। তবে, এর আগেই আপিল বোর্ডে অভিযোগ করে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন নিপুন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই নিপুন বলেছিলেন, আমি হারিনি, হেরেছে গোটা বাংলাদেশ। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, একটি চক্র তাকে হারিয়ে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন নিপুন। চক্রের সদস্য হিসেবে যাদের নাম বলেছিলেন, তারা হলেন জায়েদ খান, এফডিসির এমডি নুজহাত ইয়াসমীন এবং এবারের ভোটের প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন।
এতো ভোটযুদ্ধের পরের গল্প। ভোটের আগের গল্পেও নাছোড়াবান্দা রূপে ছিলেন নিপুন। শুরু থেকেই অনেকের প্রশ্ন ছিল, একে-তো নারী প্রার্থী, অন্যদিকে পরপর দুইবার সাধারণ সম্পাদকের পদে জয় পাওয়া জায়েদ খানের বিরুদ্ধে কতোটা লড়তে পারবেন তিনি। কিন্তু নিন্দুকদের কথা উড়িয়ে ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে এসেছে, নিপুন ততোই আলোচনায় এসেছেন। আর মিশা-জায়েদের সমালোচনায় মুখ খুলেছেন বরাবরই।
নিন্দুকদের হতাশ করে শনিবার জয় পাওয়ার পর কান্নাভেজা কণ্ঠে নিপুন বললেন, সত্যের জয় হয়েছে। তবে, এখানেই হয়তো শেয় নয়; শিল্পী সমিতি নির্বাচনের নাটকীয়তার গল্প। আদালতে যেতে পারেন জায়েদ খানও। নিশ্চয় সেখানে আবারও নাছোড়বান্দা রূপে দেখা যাবে নিপুনকে। আর যদি জায়েদ খান আদালতে না যায়, তাহলে তো কথাই নাই।
শেষ পর্যন্ত নিপুনের হাসিই যদি টিকে থাকে, তাহলে তিনিই হতে যাচ্ছেন শিল্পী সমিতির প্রথম কোনো নারী সাধারণ সম্পাদক। শুধু সাধারণ সম্পাদক পদে নয়, এর আগে সভাপতি পদেও কোনো নারী দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পাননি।
প্রসঙ্গত, অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনায় জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয় বলে জানিয়েছেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান। নিপুনের অভিযোগ আমলে নিয়ে এমন সিন্ধান্ত ঘোষণা করে আপিল বোর্ড।
এমএন/
Leave a reply