মাহফুজ মিশু:
নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুদান পেতে হলে দেশটির সংশোধিত লিহেই আইনে সম্মতি জানাতে হবে বাংলাদেশকে। মার্কিন কংগ্রেস লিহেই আইনের আইনি প্রক্রিয়ায় সংশোধন এনেছে। ফলে সহযোগিতা নিতে আগ্রহী কোনো দেশের এ বিষয়ে মতামত দেয়ার সুযোগ নেই।
লিহেই আইনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে কিনা, রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) জানতে চাইলে এ কথা জানান মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা।
গেল বছর লিহেই আইনে মার্কিন কংগ্রেস সংশোধনী এনেছে। এ অনুযায়ী কোনো দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আছে কিনা তা নিয়ে লিখিত চুক্তি করতে হবে। চুক্তি ছাড়া কোনো বাহিনী সহায়তার জন্য মনোনীত হবে না। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সব দেশের জন্য এ আইন কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধিত আইন অনুযায়ী চুক্তির জন্য বাংলাদেশকে সময় বেধে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। পরে বাংলাদেশের অনুরোধে ওই সময়সীমা বাড়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত মতামত জানায়নি বাংলাদেশ। কূটনীতিক সূত্রগুলো বলছে, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। ফলে লিহেই আইনের আওতায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য অনুদান এখনও অব্যাহত আছে। বাংলাদেশ সংশোধনী আইনে সম্মতি না জানালে কী হবে, এই প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, লিহেই আইনের আওতায় সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই সম্মত। লিহেই আইনে যে সামান্য পরিবর্তন এসেছে, এর পরিধিও সীমিত। মতামত জানাতে দেরি করলে প্রতিরক্ষা সহায়তা পাওয়ার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে।
অপর এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, এ আইনের আওতায় বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে থেকে সহযোগিতা পাচ্ছে। অর্থাৎ, গত ২৫ বছর ধরে বাংলাদেশকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন, প্রতিরক্ষা খাতে দক্ষতা অর্জনসহ এই খাতে সহযোগিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। যে পরিবর্তন বিদ্যমান আইনটিতে আনা হয়েছে, তার পরিধি খুবই সীমিত। বছরের পর বছর ধরে লাখ লাখ ডলারের সহযোগিতা বাংলাদেশকে দেয়া হচ্ছে।
লিহেই আইনে যে সংশোধনী আনা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের মতামত বা প্রস্তাব যুক্ত করার সুযোগ আছে কিনা, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তা বলেন, প্রথমত আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব আইন। এতে পরিবর্তন যেটা আনা হয়েছে, সেটিও খুব সামান্য। কাজেই এখানে অন্য দেশের মতামত যুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ও রাজস্ব বিভাগ গত বছরের ডিসেম্বরে র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
লিহেই আইনের আওতায় র্যাব কোনো সহায়তা পাবে কিনা, জানতে চাইলে মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি হিউম্যান রাইটস একাউনটিবিলিটে অ্যাক্ট এবং লিহেই আইন দুটি পৃথক আইন। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব ২০১৮ সালে তহবিল পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে।
Leave a reply