প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলা ভ্যাকসিন বিরোধী বিক্ষোভে বিপর্যস্ত কানাডা। এই বিক্ষোভ উত্তাপ ছড়িয়েছে কানাডার পার্লামেন্টেও। যেকোনো মূল্যে এই বিক্ষোভ দমনের ঘোষণা দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
ভ্যাকসিন বিরোধী বিক্ষোভে মাইলের পর মাইল আটকে পড়া যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে হুরোন বন্দরে। যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তের ব্যস্ততম এই বন্দরের দৃশ্য পাল্টে গেছে মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে। তবে গেল ১৩ দিন ধরেই চলছে ভ্যাকসিন এবং করোনা শিষ্টাচারবিরোধী আন্দোলন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, মহামারি নিয়ন্ত্রণের অজুহাতে সরকার ব্যক্তি অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। এরইমধ্যে বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে থাকা কানাডার বেশিরভাগ সীমান্ত পথই অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ফলে বন্ধ রয়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ। কানাডা সীমান্ত সংলগ্ন কারখানায় গাড়ি উৎপাদন বন্ধ রেখেছে ফোর্ড এবং টয়োটা। শঙ্কা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এই পরিস্থিতিতে বিপর্যয় ঘটবে কৃষি ও গাড়ি নির্মাণ শিল্পে।
বিক্ষোভ ইস্যুতে উত্তাল হয়েছে কানাডার পার্লামেন্ট। সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছে বিরোধী শিবির। আর ট্রুডো প্রশাসন বলছে, এই ইস্যুতে রাজনীতি করছে বিরোধী দল। বিক্ষোভকারীদের দমাতে হুঁশিয়ারিও দেন প্রধানমন্ত্রী। জাস্টিন ট্রুডো বলেন, আইন করে, কড়াকড়ি আরোপ করে কিংবা বিক্ষোভ করে মহামারি ঠেকানো যায় না। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরিয়ে আনতে হলে বিজ্ঞানসম্মত জনস্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি ও নিয়ম মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। অথচ যেসব দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করা হচ্ছে তা পুরোপুরি এই রীতির বিরুদ্ধে। আর বিরোধী দল এই কঠিন সময় ইস্যুটিকে ঘিরে রাজনীতি করতে চাচ্ছে, যা দুঃখজনক। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই বিক্ষোভ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই আমরা নেবো।
কানাডার রক্ষণশীল নেতা ওয়ারেন স্টেনলি বলেন, দীর্ঘ দু’বছর ধরে চলা কড়াকড়ির কারণে কানাডাবাসী হতাশ ও বিরক্ত। তারই বহিঃপ্রকাশ এই বিক্ষোভ। প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে, কেন তিনি সাধারণ মানুষের কথা শুনছেন না।
আরও পড়ুন: ট্রাকচালকদের বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার সংযোগ সেতু অচল
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, কানাডায় যে পরিস্থিতি চলছে তা উদ্বেগজনক। যেসব সড়ক এবং সেতু যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার বাণিজ্যের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেসব পথ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এই বিক্ষোভ গাড়ি নির্মাণ শিল্প এবং কৃষিখাতকে বিপর্যস্ত করতে পারে, যা দুই দেশের জন্যই বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হবে।
এদিকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অব্যাহত আছে ধরপাকড়। এখন পর্যন্ত মামলা করা হয়েছে ১৩শ’র বেশি। গ্রেফতার করা হয়েছে ২৩ জনকে।
আরও পড়ুন: নিউজিল্যান্ডে করোনার বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার দাবিতে পার্লামেন্ট ভবন ঘেরাও
Leave a reply