দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা করে তার মোবাইলটি প্রথম পক্ষের শ্যালিকাকে উপহার দিয়েছিল স্বামী। হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক বছর পর ওই মোবাইলের সূত্র ধরেই হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামিকে গ্রেফতার করে পিবিআই৷ পুলিশ বলছে, দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রীকে খুন করে টুকরো টুকরো করে ফ্রিজে রেখে পরে আস্তে আস্তে পাশের ডোবায় ফেলে দেয় স্বামী।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার ওই ডোবাটি সেচা শুরু হয় বুধবার রাতে। পানি তুলতে লাগানো হয় কয়েকটি সেচ পাম্প। উদ্দেশ্য স্বামীর হাতে খুন তানজিনার দেহাবশেষ উদ্ধার। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ডুবরিরা।
এক পর্যায়ে উদ্ধার হয় বেশ কয়েক টুকরো হাড়। নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক শাকিল হোসেন হাড়গুলো দেখে বললেন, টুকরোগুলো ওই নারীরই হওয়ার কথা। তবে নিশ্চিত হতে ডিএনএ টেস্ট করতে হবে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, ফতুল্লার একটি বাড়িতে তিন তলায় স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া থাকতেন রংপুরের রাসেল ও তানজিনা। গত বছর দাম্পত্য কলহের জেরে তানজিনাকে খুন করে রাসেল।
২০২১ সালের মার্চে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বালু মাঠ থেকে অজ্ঞাত এর নারীর বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার হয়। ঘটনার পর মামলা হলেও নিহতের পরিচয় শনাক্ত ও আসামি গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন,পিবিআই। তদন্ত কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সেই খণ্ডিত মাথা ও একটি নিখোঁজ জিডির সূত্র ধরে তদন্তে নামেন। উদ্ধার হয় নিখোঁজ গার্মেন্টস কর্মী তানজিনার মোবাইল ফোনটি। জানা যায়, মোবাইলটি তানজিনার স্বামী রাসেল তার আগের পক্ষের শ্যালিকাকে উপহার দিয়েছিল।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানালেন, তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই রংপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় ঘাতক রাসেলকে। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে রাসেল৷ সে জানায়, দাম্পত্য কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যা করে মাথা বালুর মাঠে ও বাকি দেহ টুকরো টুকরো করে পাশের ডোবায় ফেলে দেয়।
নিহত তানজিনার পরিবার বলছে, রাসেলের বাড়ি তাদের এলাকায়। তার আগেও একটি স্ত্রী রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়েছেন তারা। তানজিনার মা বলছেন, খুেনর বদলে মৃত্যুদণ্ড চান তিনি। তানজিনার সহোদর বোনও চান রাসেলের কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি।
রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত কিনা তা জানতে রাসেলকে রিমান্ডে নেয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
/এডব্লিউ
Leave a reply