ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করা রাশিয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার আরও চারটি রাশিয়ান ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লো। এছাড়া আমেরিকায় থাকা রুশ ব্যাংকগুলোর সম্পত্তি ফ্রিজ করছে বাইডেন প্রশাসন। তবে সরাসরি ইউক্রেনের পক্ষে তারা যুদ্ধে জড়াবে না বলেও ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে এসব কথা জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এসময় তিনি বলেন, পুতিন এই যুদ্ধ শুরু করেছেন, তাকে ফল ভোগ করতে হবে। তবে সরাসরি কোনো যুদ্ধে জড়াচ্ছেন না তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের যুদ্ধে না জড়ানোর সিদ্ধান্তকে নানা মহল নানাভাবে ব্যাখ্যা করছে। অনেকেই এমন সিদ্ধান্তকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন। এদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের মুখে যুদ্ধ চলছেই। সেখানে দুই পক্ষেই বেশ সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রও দখলে নেয় তারা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয় রাশিয়া। ফলে ক্রাইমিয়ার পর আবারও বিভক্ত হয় ইউক্রেন। চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা বৈঠক। এতে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চীন।
বৃহস্পতিবারই ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ভোর থেকে নানা জায়গায় হামলা চালিয়ে সন্ধ্যার দিকে রাজধানী কিয়েভের দিকে এগোতে থাকে রুশ সেনারা। কিয়েভ ও খারকভের বিমানঘাঁটি দখল করে সেসব তছনছ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির জানান, এসব বিমানঘাঁটি রাশিয়ান ফৌজের হাত থেকে পুনরুদ্ধার করবেন তারা। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে যোগ্য জবাব দিতে জি-৭ গোষ্ঠীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক সারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। আর এরপরই তিনি রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। একই পথে হেঁটেছে ব্রিটেনও। বরিস জনসন সরকারও বেশ কিছু রুশ ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছে তার। তিনি বলেন, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো এই যুদ্ধে শামিল হবে। তবে সেনা কমান্ডোদের পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার এ নিয়ে ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। তাতে বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন বাইডেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমি জানি, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপালেই রাশিয়ার আগ্রাসন থামবে না। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এর ফল তাকে ভুগতে হবে। রাশিয়ানরা বুঝতে পারবেন, তারা কী বিপদ ডেকে এনেছেন। তিনি বলেন, পুতিন সোভিয়েত ইউনিয়ন পুনর্গঠনে আগ্রহী।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন নিয়ে ভারতের ভূমিকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে আমেরিকার।
/এডব্লিউ
Leave a reply