কোম্পানীগঞ্জে কলেজছাত্রী প্রিয়তা হত্যার রহস্য উদঘাটন

|

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্রী শাহনাজ পারভিন প্রিয়তা (২২) খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দুই আসামিকে।

তারা হলেন, উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জমিন মাঝি বাড়ির মকবুল আহাম্মদের ছেলে অটোরিকশা চালক মো. রুবেল (২৮) ও চরফকিরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মজিবুল হক মাস্টার বাড়ির মজিবুল হকের ছেলে মমিনুল হক ফারুক (৩০)।

শুক্রবার (৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) দীপক জ্যোতি খীসা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকে স্থানীয় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালক মো. রুবেল পলাতক ছিল। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পার্শ্ববর্তী সুবর্ণচর উপজেলার চররশিদ গ্রামে অভিযান চালিয়ে আসামির শ্বশুর বাড়ি থেকে শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। তার গলার নিচে ভুক্তভোগীর নখের আঁচড়ের দাগ দেখায়। সে জানায় দীর্ঘদিন যাবত উক্ত তরুণীর প্রতি তার লোলুপ দৃষ্টি ছিল।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ঘটনার রাতে তরুণী রুবেলের অটোরিকশায় উঠলে সে সোজা পথে না গিয়ে কবরস্থানের পাশে জমির আইল সদৃশ রাস্তা দিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে যেতে থাকে। এতে তরুণী প্রতিবাদ করলে সে জানায় এটা ভুক্তভোগীর নানা বাড়ী যাওয়ার সবচেয়ে সোজা পথ। তখন ভুক্তভোগী রিকশা থেকে নেমে খেতের মধ্য দিয়ে হাঁটা শুরু করলে রুবেল পিছন থেকে ভুক্তভোগীকে আকস্মিক আক্রমণ করে তার মুখ চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ভুক্তভোগী কাবু হয়ে পড়লে ওড়না দিয়ে তার মুখ শক্ত করে বেঁধে আসামি রুবেল তাকে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে সে দেখতে পায় ভুক্তভোগী দম বন্ধ হয়ে মারা গেছে।

পুলিশ জানায়, তখন সে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে এবং পথিমধ্যে জামাইয়ের টেক মোড়ের মসজিদের পাশে খেতের মধ্যে মোবাইল থেকে সিম খুলে ভেঙ্গে ছুড়ে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ আসামি রুবেলের স্বীকারোক্তিতে নিহত তরুণীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও দু’টি ভাঙ্গা সিম কার্ড ও হত্যাকারীর অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় ১ মার্চ লিখিত এজাহার দাখিল করলে পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেফতার করে।

উল্লেখ্য, ২৮ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) দুপুরে বসুরহাট পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ধানক্ষেত থেকে শাহানাজ পারভিন প্রিয়তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রিয়তা বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং বসুরহাট মডার্ন হাসপাতালের নার্স হিসেবে কর্মরত ছিল। সে কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আশ্রাফপুর গ্রামের ফেঞ্জু মিয়া বাড়ির নুরুন্নবীর মেয়ে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply