লিঙ্গবৈষম্যহীন ও অধিকারবান্ধব রাষ্ট্র চাই: এবি পার্টি

|

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকেল ৪ টায় রাজধানীর বিজয় নগরস্থ এবি মিলনায়তনে এবি পার্টি মহিলা বিভাগ এক মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আইনজীবী ও মানবাধিকার বিষয়ক নেত্রী ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্টির আহবায়ক ও সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহবায়ক বিএম নাজমুল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপির ৫০ বছরের রাজনীতি দেশকে যেমন হতাশ করেছে তেমনি নারীদের অধিকার রক্ষায়ও উভয় দল ব্যর্থ হয়েছে। গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের স্বার্থ নিয়ে চিন্তিত থাকে আর অগণতান্ত্রিক সরকারের ভয়ে জনগণ সবসময় তটস্থ থাকে। এসময় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি অভিযোগ করেন, এ সরকার দেশের অর্থনীতি, শিক্ষাসহ সব দিক দিয়ে দেশকে শেষ করে দিয়েছে। সর্বাধুনিক রাষ্ট্রের ধারণা হলো অধিকারবাদী রাষ্ট্র, এখান থেকেই তৈরি হয় নাগরিক ধারণার পূর্ণতা। আজকে নারীরাও যদি একই ধারণা পোষণ করেন তবে তারা তাদের অধিকার অর্জনে সাম্যতা পাবে। তিনি আরও বলেন, এবি পার্টির সংগ্রাম নারী-পুরুষের বৈষম্যহীন ও অধিকারবান্ধব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।

সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ও দলের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া নারী অধিকার এবং নাগরিক অধিকার কোনটিই অর্জন সম্ভব নয়। নারীর অবদান ও অন্তর্ভূক্তি ছাড়া সমাজ সম্পুর্ণ হতে পারেনা। আমার বাংলাদেশ পার্টির ‘নতুন স্বপ্ন ও নতুন চিন্তা’ এ বিষয়ে পথ দেখাবে এটা আমরা বিশ্বাস করতে চাই।

তিনি বলেন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রবর্তন করা হয়েছে কিন্তু ধর্ষিতারা রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে বিচায় পায় না। পার্লামেন্টে সাগর রুনি হত্যার বিচার নিয়ে একটা অধিবেশন হওয়া দরকার বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা সুযোগ পেলে দেশের নারী সমাজকে মানব সম্পদে পরিণত করবো ইনশাআল্লাহ।

ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, নারী দিবস পালিত হচ্ছে সুদীর্ঘ সময় ধরে। আমরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। ৭১ এ আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেও কী স্বাধীন থাকতে পারছি? এখন অধিকারের জন্য আমাদের আরেকটি মুক্তিযুদ্ধ করতে হচ্ছে। আমাদের নেতারা জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার নিয়ে গর্ব করেছেন কিন্ত প্রবৃদ্ধির সংজ্ঞা-হিসাব সবই মনগড়া।

তিনি বলেন, আমরা এখনও একটি অন্ধকার যুগে আছি যেখানে নারীরা আজও ধর্ষিতা হচ্ছেন, পরিবারের মধ্যে নিপীড়িত হচ্ছেন, শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রীরা রাজনৈতিকভাবে নিপীড়িত হচ্ছে। যে নারী দিবস আমাদের আজ সম্ভ্রম দিতে পারেনি, সে নারী দিবস আমরা চাই না। আমাদের সমস্যা হলো মাইন্ডসেট। আমাদের সেই মাইন্ডসেট থেকে বের হতে হবে। নারী অগ্রাধিকার পাওয়া রাষ্ট্রগুলোতে ন্যায়বিচার আছে, সেখানে সঠিক বিচার পায় মানুষ। বাংলাদেশেও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করতে না পারলে যত আন্দোলনই করি লাভ হবে না। নারী অধিকার নিশ্চিত করতে হলে নারী পুরুষ সবাইকে একসাথে এগিয়ে আসতে হবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, যুবনেতা ইলিয়াস আলী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জামিল আব্দুর রব, আব্দুল হালিম নান্নু, লুৎফুর রহমান, এবি পার্টি মহিলা বিভাগের নেত্রী সুলতানা রাজিয়া, আমেনা বেগম, শীলা আক্তার, ফেরদৌস আক্তার অপি, সাজেদা মুন্নী, শামীমা আক্তার কলি, সারাফ আনজুম বিভার, আনিকা সাকিনসহ মহিলা বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply