তেলের দাম নিয়ে অস্থিরতার মধ্যে সম্প্রতি বেশকিছু দিন ধরেই ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে ভোজ্যতেলের ওপর ভ্যাট কমানোর দাবি আসতে থাকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ দাবির পক্ষে থাকলেও বিপক্ষে ছিল রাজস্ব বোর্ড। এবার ভোজ্যতেলসহ চিনি ও ছোলার ওপরও ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দুপুরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল জানিয়েছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্যই পণ্যগুলোর ওপর আমদানি ও ভোক্তা পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমনকি এ সিদ্ধান্ত আজ থেকে কার্যকর করারও কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী। সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী জানান, সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হবে। এর ফলে বাজারে সবচেয়ে আলোচিত এই পণ্যটির দাম অন্তত বিশ শতাংশ কমার কথা রয়েছে। তবে ব্যবহারিক পর্যায়ে বাজারে দাম কমার বিষয়ে সন্দিহান অনেকেই।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম খান মনে করেন, ভোক্তা পর্যায়ে বাজারে এই দাম কার্যকর করার সক্ষমতা সরকারের নেই। তিনি বলেন, সয়াবিন তেলের সরকার নির্ধারিত মূল্যই তারা বাস্তবায়ন করতে পারছে না। মূলত এ উদ্যোগে ব্যবসায়ীদের লাভ হলেও ভোক্তা পর্যায়ে বাজারে এর কী প্রভাব পড়বে বা আদৌ ইতিবাচক কোনো প্রভাব পড়বে কিনা, তা বলা যায় না।
রমজানকে সামনে রেখে তেলের পাশাপাশি ছোলা ও চিনির দাম বাড়ছে গত ৩ মাস ধরে। অর্থমন্ত্রী যদিও জানিয়েছেন, সরকার নানা কৌশলে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে। আর তারই চূড়ান্ত ধাপ পণ্যগুলোর ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার। মূলত রমজান মাসে যেসব পণ্য বেশি প্রয়োজন সেসব পণ্যের ওপর থেকেই ভ্যাট কমানো হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, ভোজ্যতেলের আমদানি মূল্যের ওপর আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর ছিল। স্থানীয় পর্যায়ে বিক্রির সময়ও ছিল ১৫ শতাংশ ভ্যাট। এখন আমদানিকারকদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের পাশাপাশি ভোক্তা পর্যায়েও ভ্যাট প্রত্যাহার হলো ৫ শতাংশ। এ নির্দেশ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রী।
এর আগে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার সয়াবিনে ১২ টাকা দাম বাড়ানোর অনুমতি চেয়েছিলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়াটি আটকে দিলেও স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন পর্যায়ে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সয়াবিন তেল। মূলত ব্যবসায়ীদের দাম বাড়ানোর অনুমতি না দেয়ার পর থেকেই তেলের বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়। এমনকি গত বৃহস্পতি-শুক্রবার বাজারে তেল পাওয়া যায়নি বলেও গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
/এডব্লিউ
Leave a reply