আবারও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন

|

ড. কামাল হোসেন। ফাইল ছবি।

ফের গণফোরামের সভাপতি হয়েছেন ড. কামাল হোসেন। শনিবার (১২ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে তাকে আবারও সভাপতি ঘোষণা করা হয়। তবে কাউন্সিলে উপস্থিত ছিলেন না তিনি। তার অনুপস্থিতে সভাপতি হিসেবে ড. কামাল হোসেন এর নাম প্রস্তাব করেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খান। এ সময় উপস্থিত সদস্য ও কাউন্সিলরেরা প্রস্তাবে হাততালি দিয়ে সমর্থন জানান।

আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে ১৯৯৩ সালের ৪ নভেম্বর গণফোরাম গঠন করেন ড. কামাল হোসেন। সঙ্গে নেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) থেকে বেরিয়ে আসা সাইফ উদ্দিন আহমেদ মানিককে। এর কয়েক বছর পর সাইফ উদ্দিন আহমেদ মানিক মারা গেলে আওয়ামী যুবলীগ থেকে আসা মোস্তফা মহসিন মন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিলে গণফোরামের পঞ্চম কাউন্সিলে কামাল হোসেন সভাপতি ও রেজা কিবরিয়া সাধারণ সম্পাদক হন। শুরু থেকেই দলের সভাপতি পদে রয়েছেন ড. কামাল হোসেন।

পঞ্চম কাউন্সিলের পর থেকে দলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তা আরও বেড়ে যায় ওই কাউন্সিলের সপ্তাহখানেক পর দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেন তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে বাদ দিয়ে ড. রেজা কিবরিয়াকে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করলে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে মোস্তফা মহসিন মন্টুকে সভাপতি ও সুব্রত চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে গণফোরামের একাংশের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্য দিয়ে দলটির বিভক্তি প্রকাশ্যে আসে। ওইদিন অধ্যাপক আবু সাইয়িদ কাউন্সিল সভা শেষে দলের ১৫৭ সদস্যের নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন। কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, শনিবার অনুষ্ঠিত গণফোরামের এই বিশেষ কাউন্সিল ঘিরে দলটির বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন অংশের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের ভেতরে ঢুকে কাউন্সিলে হামলা করে। পরে পুলিশ এসে একপক্ষকে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে বের করে দেয়।

তবে এদিন বিকেলে আয়োজিত জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে হামলার দায় অস্বীকার করেছেন গণফোরাম একাংশের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু। তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে আমার দলীয় কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়। সাধারণ সম্পাদক কে হবেন, মোকাব্বির খান না শফিক উল্লাহ— এ নিয়ে নিজেরাই মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন বলেও দাবি করেন মোস্তফা মহসিন মন্টু। আরও বলেন, নিজেদের দোষ ঢাকার জন্য বিষয়টি আমাদের ওপরে চাপিয়েছে। আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ গণফোরাম।

গণফোরামে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই দ্বন্দ্বের নাটের গুরু কে? সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ড. কামাল সাহেব আমাদেরকে চিঠি দিয়ে সম্মতি জানিয়েছেন, আবার মোকাব্বির সাহেবদেরও সম্মতি জানিয়েছেন। ড. কামাল হোসেন নিজেই নাটের গুরু কিনা আমরা তা বলতে চাই না। তবে নাটের গুরু মোকাব্বির খান এমপি তা নিশ্চিত।

নির্বাচন কমিশন তাদের কমিটিকে বৈধতা দেননি এবং নিবন্ধনও নেই, এমন প্রশ্নও করে সাংবাদিকেরা। জবাবে মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, এ বিষয়ে আদালতে রিট করা হয়েছে। বিষয়টি আদালত ফয়সালা করবে।
গত বৃহস্পতিবার ড. কামালের অংশের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খানের নেতৃত্বে এই বিশেষ কাউন্সিল আহ্বান করা হয়েছিল। মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের একাংশ এই কাউন্সিলকে অবৈধ ঘোষণা করে। দুই অংশের এই কোন্দলকে কেন্দ্র করে গত বুধবার গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেনের নামে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন মন্টুর নেতৃত্বাধীন অংশের নেতারা।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply