মিয়ানমার জান্তার হত্যা ও যুদ্ধাপরাধ নিয়ে প্রতিবেদন, নিহত কমপক্ষে ১৬শ’

|

ছবি: সংগৃহীত

গত বছর সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের শিকার কমপক্ষে ১৬শ’ মানুষ। আটক সাড়ে ১২ হাজারের বেশি। প্রায় সাড়ে ৪ লাখের মতো মানুষ হয়েছে বাস্তুচ্যুত। ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষের জরুরি মানবিক সহায়তা দরকার হলেও তা প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব ভয়াবহ তথ্য। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, নিপীড়ন ও গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ফ্রি বার্মা রেঞ্জার্স’র সদস্যদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে মিয়ানমারের সেনাদের হামলার রোমহর্ষক চিত্র। সেখানে দেখা যায়, জান্তা বাহিনীর নির্বিচার হত্যা আর বর্বরতার দৃশ্য। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) জাতিসংঘের প্রকাশিত প্রতিবেদনেও উঠে আসে নিপীড়নের ভয়াবহ তথ্য। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের পর প্রথমবারের মতো দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন। এতে বলা হয়, পরিকল্পনা করেই নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে জান্তা। ওএইচসিএইচআর’র মুখপাত্র রাভিনা শ্যামদাসানি বলেন, গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখলের পর থেকে পদ্ধতিগতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে মিয়ানমারের সেনারা। যেগুলোর কিছু কিছু যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধের শামিল। মানুষের জীবনের মূল্যই দেয় না সেনারা।

কয়েকশ’ ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে এই প্রতিবেদন। সেই সাথে, এর সত্যতা পাওয়া গেছে স্যাটেলাইট ইমেজে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে টার্গেট করা হচ্ছে বেসামরিকদের। জনবহুল এলাকায় চলছে বিমান হামলা ও ভারী অস্ত্রের ব্যবহার। নির্বিচারে গুলি করে কিংবা পুড়িয়ে হত্যার মতো জঘন্য অপরাধও করছে জান্তা বাহিনী।

ছবি: সংগৃহীত

রাভিনা শ্যামদাসানি বলেন, সাগাইং অভিযানে একসাথে ৪০ জনকে হত্যা করেছে সেনারা। গত ডিসেম্বরে কায়া প্রদেশে পুড়িয়ে মারা হয় ৪০ জনকে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও ছিল। কয়েকটি ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় মরদেহ।

আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় চালানো হয় নির্যাতন। উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা, ইলেকট্রিক শক, মাদক প্রয়োগ এমনকি ধর্ষণসহ যৌন নির্যাতনের শিকার হয় বহু মানুষ। বর্বরতা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছে জাতিসংঘ। এ নিয়ে ওএইচসিএইচআর’র মুখপাত্র বলেন, মিয়ানমারের জনগণ যে ভয়ঙ্কর নির্যাতন ভোগ করছে, তার বিরুদ্ধে কঠোর ও সমন্বিত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ দরকার। আরও মানুষ যাতে নিপীড়নের শিকার না হয়, সেজন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখলের পর নজিরবিহীন প্রতিরোধের মুখে পড়ে জান্তা বাহিনী। প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে যোগ দেয় সাধারণ মানুষ। তখন থেকেই ধরপাকড় ও নির্যাতন বেড়ে যায় বহুগুণ।

আরও পড়ুন: পুতিন কি আসলেই ক্যানসারে আক্রান্ত?

এম ই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply