রুশ-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর থেকেই বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে বায়ো ল্যাব ইস্যুতে। ইউক্রেনে জীবাণু এবং রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির কারখানা আছে- এমন অভিযোগে কথার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে চীন, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিমাদের দাবি, ৫ হাজারের বেশি রাসায়নিক অস্ত্র রয়েছে রাশিয়ার কাছে। খবর গ্লোবাল টাইমসের।
রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে এখন বিবাদ তুঙ্গে। রাশিয়ার অভিযোগ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৩০০টি বায়ো ল্যাব পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বেইজিংয়ের দাবি রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধের কনভেশনের শর্ত ভঙ্গ করছে ওয়াশিংটন। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এসব অভিযোগ তুলে ইউক্রেনে হামলার সুযোগ খুঁজছে রাশিয়া। রুশ-ইউক্রেন সমঝোতায় বায়ো ল্যাব ইস্যুটি বড় বাধা হতে পারে বলেও মনে করে হোয়াইট হাউস।
এর আগে, ১৯৭৫ সালে বায়োলজিক্যাল ওয়েপন কনভেনশনের মাধ্যমে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার রোধ করা হয়। যদিও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্র রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি বন্ধ রেখেছে। তবে মস্কোর দাবি নিজেরা অস্ত্র তৈরি না করলেও বিশ্বজুড়ে ৩০০টি ল্যাব পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এরমধ্যে ২০ থেকে ৩০টি রয়েছে ইউক্রেনে। যেগুলোকে রাশিয়ার জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখছে পুতিন সরকার। বলছে। পার্শ্ববর্তী দেশে কোনোভাবেই রাসায়নিক এবং জীবাণু অস্ত্র তৈরির কারখানা বরদাশত করা হবে না।
এ প্রসঙ্গে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, বেসামরিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নয়, ইউক্রেনের এসব গবেষণাগার পরিচালিত হচ্ছে সামরিক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে। এবং সেটিও পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটোর মতো শক্তিগুলো। খেয়াল করলে দেখবেন এসব বায়ো ল্যাবের অবস্থান রাশিয়ার খুব কাছাকাছি। ফলে আমাদের জন্য বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, কোভিড নাইনটিন ভাইরাস ও মহামারী বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বায়ো ল্যাব ইস্যুতে চাপের মুখে রয়েছে চীন। তারাও বলছে স্বচ্ছতা থাকলে এসব গবেষণাগারের বিস্তারিত প্রকাশ করা উচিত যুক্তরাষ্ট্রের।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট পাউডারকেকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আখ্যা দিয়ে ইরাকে আক্রমন করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। এই দেশটি সবসময় রাসায়নিক এবং জীবাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা নিয়ে সোচ্চার। বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে বিভিন্ন দেশ এবং সামরিক বাহিনীর প্রতিও। তাহলে তারা কেন ইউক্রেনে বায়ো ল্যাবের সাথে জড়ালো?
তবে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, স্বাস্থ্যখাতে গবেষণার জন্যই এসব ল্যাব পরিচালনায় সহায়তা করছে তারা। তবে এ ধরনের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ রুশ-ইউক্রেন সমঝোতায় বাধা হতে পরে এমন শঙ্কা ওয়াশিংটনের। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, রাশিয়ার পরিকল্পনা আছে ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে হামলা করার। এটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো খুবই উদ্বিগ্ন। এ বিষয়টির যতক্ষণ না সুরাহা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সমঝোতা হওয়া কঠিন।
/এসএইচ
Leave a reply