একাধিকবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী‌, গ্রেফতার ৩

|

স্টাফ রি‌পোর্টার, পটুয়াখালী:

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক স্কুলছাত্রী‌কে একাধিকবার সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পু‌লিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ‌বাইশ বছর বয়‌সী মো. মাসুম ‌মিয়া ও গোপাল চন্দ্র মিস্ত্রী এবং পঁচিশ বছর বয়‌সী ‌মো. শাকিল হো‌সেন। কলাপাড়া পৌরশহরের বিভিন্ন এলাকায় তাদের বাড়ি।

গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকা‌লের দি‌কে আসামিদের কলাপাড়া সি‌নিয়র জু‌ডি‌শিয়াল আদাল‌তের মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলা কারাগা‌রে পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে ব‌লে নি‌শ্চিত ক‌রেছেন কলাপাড়া থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ (ও‌সি) মো. জ‌সিম। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথ‌মিক জিজ্ঞাসাবাদে পু‌লি‌শের কা‌ছে ধর্ষণের কথা স্বীকার ক‌রে‌ছে ব‌লেও ও‌সি জানান।

এর আ‌গে নির্যা‌তিত ছাত্রীর মা বাদী হ‌য়ে সোমবার বিকা‌লে কলাপাড়া থানায় এক‌টি লি‌খিত অ‌ভি‌যোগ দা‌য়ের ক‌রেন। অ‌ভি‌যোগ দা‌য়ে‌রের পর রাতভর পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় অ‌ভিযান চা‌লি‌য়ে কলাপাড়া থানা পু‌লিশ তা‌দের‌কে গ্রেফতার ক‌রে।

মামলার বরাত দি‌য়ে ও‌সি মো. জ‌সিম জানান, কলাপাড়া উপ‌জেলার খেপুপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে উপ‌জেলা হাসপাতালে করোনার টিকা নিতে আসে। এ সময় মাসুম না‌মের এক যুব‌কের সা‌থে তার প‌রিচয় হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৮ মার্চ বিকেলে মাসুম তাকে বাসা থেকে সুকৌশলে বের করে উপ‌জেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া গ্রামে নিয়ে যায়। ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাসুম ও তার বন্ধু শাকিল ওই ছাত্রী‌কে ধর্ষণ করেন। এক পর্যা‌য়ে ওই ছাত্রী অসুস্থবোধ করলে মাসুম ও শা‌কিল তা‌কে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। প‌রে হাসপাতালে ওই ছাত্রীকে পুনরায় ধর্ষণ করে মাসুম। এক পর্যা‌য়ে ছাত্রী‌কে হাসপাতালে রেখে চলে যায় ধর্ষক মাসুম। প‌রের দিন অ‌নেক খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ছাত্রী‌কে কলাপাড়া হাসপাতালের সামনে দেখতে পায় তার অ‌ভিভাবকরা।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, পু‌রো বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য মাসুম ও তার বন্ধুরা ভয়ভীতি দেখায়। যে কারণে পরিবারকে কিছুই জানায়নি নির্যা‌তিত ওই ছাত্রী। দুই‌দিন পর ১১ মার্চ দুপুরে ওই ছাত্রী স্কুল থেকে বাড়ি ফে‌রার পথে বিয়ের প্রলোভন দেখায় মাসুম। প‌রে শাকিল ও গোপাল মি‌লে কৌশ‌লে ওই ছাত্রী‌কে নি‌য়ে যায় উপজেলার পাখিমারা বাজার এলাকায়। পরে মাসুম তাকে বিভিন্ন স্থানে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করেন।

অপর‌দি‌কে ছাত্রীর পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে না পেয়ে সোমবার বিকা‌লে কলাপাড়া থানা পুলিশকে জানায় এবং লি‌খিত অ‌ভি‌যোগ দেয়। পরে রাতভর পৌর শহরের রহমতপুর এলাকায় অ‌ভিযান চা‌লি‌য়ে ওই ছাত্রী‌কে উদ্ধার করে পুলিশ এবং তার কথা অনুযায়ী মাসুম, শা‌কিল ও গোপাল‌কে গ্রেফতার করা হয়।

কলাপাড়া থানার অ‌ফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম জানান, ওই ছাত্রী বর্তমা‌নে সুস্থ আ‌ছেন। শারীরিক পরীক্ষার জন্য তা‌কে পটুয়াখালী মেডিকেল ক‌লেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়‌টি খ‌তি‌য়ে দেখা হ‌চ্ছে। তারপ‌রেও মে‌ডি‌কেল রি‌পোর্ট আস‌লে বিষয়‌টি আ‌রও প‌রিস্কার হ‌বে।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply