একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তে শত শত কোটি টাকা গচ্চা দিচ্ছে বিমান

|

ফাইল ছবি

আব্দুল্লাহ তুহিন, বিশেষ প্রতিনিধি:

একের পর এক ভুল সিদ্ধান্তে শত শত কোটি টাকা গচ্চা দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। দিনের পর দিন মোটা অংকের লোকসান গুণলেও দেখার যেন নেই কেউ। আর এই সুযোগে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। বিমানকে বাঁচাতে তাই জবাবদিহিতা নিশ্চিতের পরামর্শ এভিয়েশন বিশেষজ্ঞদের।

করোনা মহামারির লকডাউনে মাসের পর মাস বন্ধ ছিলো যাত্রী পরিবহন। বহরে বসে থাকা উড়োজাহাজগুলোকে তখন লাভের লোভ দেখিয়ে কার্গো পরিবহনের পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু কোন রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কার্গো পরিবহন করতে গিয়ে নষ্ট করা হয়েছে, ব্র্যান্ড নিউ ৬টিসহ ৮টি উড়ো জাহাজের সিটের হাতল, ডিসপ্লে মনিটরসহ অন্য অনেক মুল্যবান যন্ত্রাংশ। যার মুল্য কয়েক’শ কোটি টাকা।

সিভিল এভিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার কমোডোর (অব.)ইকবাল হোসেন বলেন, যেসব যন্ত্রাংশ, মনিটর, জানালার শাটার নষ্ট হয়েছে সেগুলো ঠিক করতে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। এই বিপুল ব্যয়ের দায়ভার অবশ্যই বিমানের ওপর বর্তাবে, তদন্ত হওয়া উচিত এবং যারা যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা উচিত।

৫ বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকা ঢাকা-টরেন্টো ফ্লাইট বাণিজ্যিক ভাবে চালুর ঘোষণা দেয়া হয় যথাযথ পরিকল্পনা ও প্রস্ততি ছাড়াই। কয়েক কোটি টাকা খরচের ঐ ফ্লাইটের সফরের তালিকায় নাম ওঠে মন্ত্রী, তার পরিবারের সদস্য , মন্ত্রনালয়ের আমলাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও তাদের স্বজনদের। যদিও সমালোচনার মুখে শেষ মুহূর্তে কিছু টিকিট ছাড়া হলেও অর্ধেকের বেশি আসন যাচ্ছে ফাঁকা।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল বলেন, যারা যাওয়ার বা যারা যাবেন তারা আগে থেকেই অবহিত আছেন। তারপরও এমন হতে পারে যে, যারা যাচ্ছেন বা যেতে পারেন তারা হয়তো সবাই যেতে পারবেন না।

লোকসানী এসব পরিকল্পনার পেছনে কাজ করছে একটি সিন্ডিকেট। যার নেতৃত্বে আছেন বিমানের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা। যাদের একজন একই সাথে প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, মার্কেটিং এন্ড সেলস এবং পরিকল্পনা বিভাগের পরিচালক।

বেসামরিক বিমান প্রতিমন্ত্রী এম. মাহবুব আলী বলেন, আমি একবারও বলবো না যে এই অ্যালিগেশনগুলো সত্য না, আবার এটাও বলবো না যে এই এলিশনের সবগুলোই সত্য। বিমানের অব্যবস্থাপনা নাই এটাও বলা যাবে না। কিন্তু বিমান যে একটা কঠিন সময় পার করেছে এটা তো স্বীকার করবেন সবাই।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহেদুল আলম বলেন, আমাদের অদূরদর্শীতা ও অদক্ষতার জন্য যদি এই রুটে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় যেমনটা নারিচার সাথে হয়েছে এমনটা হলে তা অবশ্যই দুঃখজনক। আমাদের এক্সিজটিং যে রুটগুলো আছে সেগুলোকেও আমরা কাজে লাগাতে পারছি না।

রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থায় এমন চিত্র যথেষ্ট উদ্বেগজনক জানিয়ে যথাযথ জবাবদিহিতা নিশ্চেতের দাবি জানিয়েছে টিআইবি।

বিমানের একটি সুত্র জানিয়েছে, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ঢাকা টরেন্টো সরাসরি ফ্লাইট চালাতে অতিরিক্ত জালানি খরচ হবে ৫০ টন। এ ক্ষেত্রে ১১৯ জনের বেশি যাত্রী নেয়া যাবেনা। এ অবস্থায় জুনের আগে ঢাকা-টরেন্টো সরাসরি ফ্লাইট চালুর সুযোগ নেই বলে জানায় বিমান কর্তৃপক্ষ।



/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply