জ্বালানি ইস্যুতে রাশিয়ার ওপর নতুন অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে দ্বিধাবিভক্ত অবস্থায় রয়েছে ইউরোপ। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাফ জানিয়েছেন, জ্বালানির দাম চুকাতে হবে নিজস্ব মুদ্রা রুবলে। আর পুতিনের এই ঘোষণা কুড়াচ্ছে ব্যাপক নিন্দা ও সমালোচনা। একে ‘ব্ল্যাকমেইল’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ইউরোপীয়ান কমিশন জানিয়েছে, প্রয়োজনে খোঁজা হবে বিকল্প পথ; তবু কেনা যাবে না রুশ জ্বালানি। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের।
ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই জ্বালানি সংকট উঠেছে চরমে। যুক্তরাষ্ট্র আর ওপেকভুক্ত দেশগুলো উৎপাদন-সরবরাহ বৃদ্ধির আশ্বাস দেয়ায় কিছুটা স্থিতিশীল হয় বাজার। এরপর, বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রুশ প্রেসিডেন্টের নতুন ঘোষণায় পাল্টে যায় পরিস্থিতি। মিত্র দেশগুলো ছাড়া অন্যান্যরা জ্বালানি কিনতে চাইলে, রুবলে মূল্য পরিশোধ করতে হবে, পুতিনের এমন ঘোষণায় শুরু হয় সমালোচনা। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, রুবলের বিনিময়ে কিনতে হবে গ্যাস, প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে গোটা রাশিয়া। নিঃসন্দেহে, দেশের অর্থনীতি এবং রুশদের জন্য এটা বড় অর্জন। কারণ, আমাদের জাতীয় মুদ্রা যথেষ্ট শক্তিশালী। আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে রুবলের ব্যবহার এখন শুধু কথায় নয়, কাজে বাস্তবায়নের সময়।
তবে এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে সোজাসাপটা ‘ব্ল্যাকমেইল’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশন। সংস্থাটি জানিয়েছে, মস্কোর ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতে গৃহীত হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লিঁয় বলেন, জ্বালানিও নিরাপত্তার অন্যতম অংশ। এ কারণেই, রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি কমানোর আহ্বান জানিয়েছি কমিশনকে। কষ্টকর হলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব। উৎপাদন বৃদ্ধি বা বিকল্প পথগুলো রয়েছে বিবেচনায়। কারণ, জ্বালানির মাধ্যমে ব্ল্যাকমেইলের কোনো সুযোগ নেই রাশিয়ার। নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতেই রুবল দিয়ে তেল-গ্যাস কেনার অনৈতিক প্রস্তাব রেখেছেন পুতিন।
এ ইস্যুতে, রাশিয়ার ওপর নতুন অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কিনা, সেই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত ইউরোপ। বেলজিয়াম প্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার দে ক্রু বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে রাশিয়ার ঠিক যতোটা ক্ষতি হবে, ইউরোপের কোনো অংশে কম হবে না। এটা নিজেদের সাথেই যুদ্ধে জড়ানো। এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া উচিত না, যাতে নিজেরাই কোণঠাসা হয়ে পড়ি। রাশিয়ার পেট্রোল ও গ্যাসের ওপর অবরোধ দিলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ইউরোপের অর্থনীতিতে।
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে, মার্চের শুরুতেই ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল জ্বালানি মূল্য। প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল বিক্রি হয় ১৩৯ ডলার পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয়রা গ্যাস নিলে রাশিয়ান মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করতে হবে: পুতিন
এম ই/
Leave a reply