স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা:
নেত্রকোণার মদনে ৭ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন বেগম আক্তার (৪৫) নামের এক নারী। ওই উপজেলার চানগাও ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের সামনের পাকা রাস্তার পাশে একটি কালভার্টের ওপর বসবাস করছেন তিনি। তিনি মদন উপজেলার শাহপুর গ্রামের মৃত উছেন আলীর মেয়ে। তবে এ ব্যাপারে প্রশাসন বার বার পদক্ষেপ নিতে চাইলেও মানতে নারাজ বেগম আক্তার।
স্থানীয় লোকজন ও বেগম আক্তারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের মাঘান গ্রামের ছাবেদ আলীর সাথে বিয়ে হয় তার। স্বামী মারা গেছেন ১০ বছর আগে। দাম্পত্য জীবনে এক কন্যা সন্তান রয়েছে তার। স্বামীর কোনো জায়গা জমি না থাকায় চলে আসেন বাবার বাড়ি শাহপুর গ্রামে। দীর্ঘদিন বসবাস করেন সহোদর ভাই রইছ উদ্দিনের বাড়িতে। ২ বছর আগে মেয়েকে বিয়ে দেন তিনি। এরপর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দারিদ্রতার কারণে এক বছর আগে তার ভাই রইছ উদ্দিনের একমাত্র বসতভিটেও অন্যত্র বিক্রি করে দেন। ভাই চলে যাওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে খোলা আকাশের নিচে জীবন কাটছে বেগম আক্তারের।
এরপর গত ৭ মাস ধরে শাহপুর গ্রামের সামনের পাকা রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে পেতেছেন সংসার। সেখানে একটি কালভার্টের ওপর রান্নাসহ থাকা-খাওয়া সবই চলে একই স্থানে। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই জীবনযাপন করছেন তিনি। গত ৭ মাসে বেশ কয়েকবার অসুস্থ হলে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন স্থাানীয় প্রশাসন। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে বার বার ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তা মানছেন না বেগম আক্তার।
বেগম আক্তার জানান, আমার কেউ নাই। একটি মেয়ে ছিল। তাকে বিয়ে দেওয়ার পর কোনো খোঁজ-খবর পাই না। কাউকে বিরক্ত না করার জন্য রাস্তার পাশে থাকছেন বলে জানান তিনি।
শাহপুর গ্রামের মোশারফ হোসন বলেন, বেগম আক্তার ৭ মাস ধরে রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। এলকাবাসীসহ স্থানীয় প্রশাসন বার বার এর ব্যবস্থা নিতে চাইছে। কিন্তু সে কোথাও যেতে রাজি হয় না। শীতকালটা ওই জায়গায় কাটিয়েছে। কিন্তু এখন ঝড়-বৃষ্টির সময় আসতেছে। একজন নারীর খোলা আকাশের নিচে বসবাস করাটা মানবিক দৃষ্টিতে খারাপ দেখায়।
মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, বেগম আক্তার দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার পাশে বসবাস করছে। আমি খবর পেয়ে কয়েকদিন তার কাছে গিয়েছি। তার বসবাসের জন্য জায়গাসহ ঘরও দিতে চেয়েছি, কিন্তু সে নিবে না। বেশ কয়েকবার অসুস্থ হওয়ায় আমি নিজে এনে হাসপাতালেও ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়েছি। সুস্থ হয়ে আবার একই জায়গায় গিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। এর পরেও একটা ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।
জেডআই/
Leave a reply