সন্তানের জন্মনিবন্ধনে ভোগান্তি; বাবা-মায়েরও করতে হচ্ছে নিবন্ধন

|

সন্তানের জন্মনিবন্ধন করা নিয়ে ভোগান্তি কাটছেই না সাধারণ মানুষের। ছেলে-মেয়ের নিবন্ধনের আগে বাধ্যতামূলকভাবে করতে হচ্ছে বাবা-মায়ের জন্মনিবন্ধন। এমনকি আগে যারা নিবন্ধন করেছেন, তাদেরও নতুন করে করতে হচ্ছে। জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার পরও কেন এই দুর্ভোগ, এ প্রশ্নের সদুত্তর দিচ্ছেন না কেউ। রাষ্ট্রীয় সেবার প্রক্রিয়া কঠিন হওয়ায় বিরক্ত সাধারণ মানুষ। যতো বেশি নিবন্ধন ততো বেশি দুর্নীতির সুযোগ, এমন অভিযোগ অনেক সেবাপ্রত্যাশীর।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের খিলগাঁও আঞ্চলিক কার্যালয় প্রাঙ্গণে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী আহসান খন্দকারের সঙ্গে। জানিয়েছেন, সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করাতে এসেছেন। এখন তারও করা লাগবে। তার দাবি, ২০১২ সালের আগে নিবন্ধন করিয়েছিলেন। কিন্তু তা সার্ভারে নাই। প্রশ্ন তুলে বলেন, এখন আমার ভোটার আইডি কার্ড আছে। তারপরেও কেন জন্ম নিবন্ধন?

আহসান খন্দকারের মতো সন্তানের জন্মনিবন্ধন করতে আসা অনেকেরই এক প্রশ্ন। যদিও এর উত্তর জানা নেই মাঠ পর্যায়ের সেবা দাতাদের।

খিলগাঁও আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার মো. লোকমান হোসেন বলেন, দুটোই কেন দরকার তা আমিও জানিনা। কেউ আসলে বলি, সরকার নিয়ম করছে করতে হবে।

সার্ভার থেকে তথ্য হারিয়ে গেছে, এমন যুক্তিতে নতুন করে জন্মনিবন্ধনের ভোগান্তি চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। কার্যালয়টিতে আসা একাধিক সেবাপ্রত্যাশীর অভিযোগ, ঘুষ বাণিজ্যের জন্যই এ বিধান।

একই জন্মনিবন্ধন দ্বিতীয়বার করতে সব প্রক্রিয়া সারতে হচ্ছে নতুন করে। অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘ সময়। তবে টাকা দিলে ঝামেলা ছাড়াই মেলে জন্মনিবন্ধন।

এ আঞ্চলিক কার্যালয়ের পাশের এক দোকানদার জানিয়েছেন, তাকে টাকা দিলে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ঝামেলা ছাড়া পাওয়া যাবে জন্মনিবন্ধন। তিনজনের নিবন্ধনেনর জন্য ওই দোকানদার দাবি করে ৩ হাজার ৩০০ টাকা। এ টাকার একটি অংশ দায়িত্বে থাকা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বাবা-মায়ের এনইডি থাকা সত্তেও জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার বিধানে নীতিগত ভুল দেখছেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখ থাকা তথ্যেই জন্মনিবন্ধন সংশোধন করা উচিত।

রাষ্ট্রীয় অনেক সেবা পেতে দেশের সব নাগরিকেরই জন্মনিবন্ধন প্রয়োজন। সংশ্লিষ্টদের মতে, সাধারণ মানুষ এর সুফল পেতে এ সেবা সহজ করতে হবে।
/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply