বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় ভেঙে পড়লো ব্রিজের ১৮ কোটি টাকার স্টেজিং

|

বলগেটের আঘাতে ব্রিজের স্টেজিং ভেঙে যাওয়ার দৃশ্য

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর কবির হাটের ধানশালিক ইউনিয়নের চাপরাশি খালের ওপর বালুবাহী বলগেটের আঘাতে ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন চর এলাহী ব্রিজের স্টেজিং ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে গেছে। এর আগে, আরও তিনবার বালুবাহী বলগেটের আঘাতে ব্রিজের দুইটি গার্ডারে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের চাপরাশি খালের উপর নির্মাণাধীন চর এলাহী ব্রিজে এ ঘটনা ঘটে।

নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বসুরহাট বাজার থেকে চর এলাহী বাজারের সাথে সরাসরি যোগাযোগের লক্ষ্যে ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৭ মিটার দীর্ঘ এ ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স এ কাজটি করছে।

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো.ইউছুফ ইউহানা বলেন, চাপরাশির হাট ও কবির হাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের অসাধু বালু ব্যবসায়ী খুরশিদ, শাহজাহান ও সোহেল অবৈধভাবে কোনো সেফটি ছাড়াই বলগেটে করে চাপরাশির খালে বালু নিয়ে আসে। এরপর সেফটি ছাড়া বলগেটটাকে যেনতেন ভাবেই রেখে যায়। এরপর বলগেটগুলো জোয়ারে ভেসে এসে নির্মাণাধীন ব্রিজের গার্ডার ক্ষতিগ্রস্থ করে এবং স্টেজিং ভেঙ্গে পানিতে তলিয়ে নিয়ে যায়। এ ব্রিজটা এখন হুমকির মুখে আছে। বড় গার্ডারটা যেকোনো মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবারের ঘটনায় প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগেও তৎকালীন কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাসিনা আক্তারকে জানানো হয়েছে কাজ চলাকালীন বলগেট চলাচল বন্ধ করার জন্য। কিন্তু অভিযুক্তরা এ নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বালু উঠিয়ে বলগেট চালানো অব্যাহত রেখেছে।

ম্যানেজার ইউছুফ আরও জানান, এখন পর্যন্ত নির্মাণাধীন ব্রিজের ৭ টা গার্ডারের কাজ করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে এ খালে প্রচণ্ড স্রোত এবং বালুবাহী জাহাজের অদক্ষ চালকের কারণে আরও ৩বার নির্মাণাধীন গার্ডারগুলোকে আঘাত করে। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা আক্তারকে জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বরং ইউএনও দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবেনা, কিন্তু তারপরও ঘটেছে।

এ বিষয়ে জানতে কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আতিকুল মামুনের ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে নোয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড.মোহাম্মদ আহাদ উল্যাহ বলেন, বিষয়টি জেনে উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নিজাম উদ্দিন সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, একাধিকবার বালুবাহী বলগেট নির্মাণাধীন ব্রিজের স্টেজিংয়ে আঘাত করায় আগামী বর্ষার আগে কাজটি সন্তোষজনক পর্যায়ে আনা কষ্টকর হয়ে পড়বে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন বিষয়টি আমি জেনেছি। ব্রিজটি কোম্পানীগঞ্জ এবং কবিরহাট উপজেলার বর্ডার এলাকায়। দুই কিলোমিটার দূরে বেধে রাখা বালুবাহী বলগেট জোয়ারের পানিতে ভেসে এলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply