একসাথে নয়, আলাদা দিনে বিভাগভিত্তিক জাতীয় নির্বাচন করার পরামর্শ সম্পাদকদের

|

সংবাদপত্র সম্পাদক ও জৈষ্ঠ্য সাংবাদিকদের সাথে আলোচনায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার

একসাথে নয়, বিভাগভিত্তিক আলাদা দিনে জাতীয় নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়েছেন সম্পাদকরা। তাতে ভোটের তদারকি করা ইসির পক্ষে সহজ হবে বলে মনে করেন তারা। সুষ্ঠু ভোটের স্বার্থে ইসি’র নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটানিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের পরামর্শ জেষ্ঠ্য সাংবাদিকদের। ইসি সংলাপে তারা এসব পরামর্শ দেন।

দায়িত্ব নেয়ার পর বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে ধারাবাহিক আলোচনা শুরু করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তৃতীয় ধাপে তিনি বসেন সংবাদপত্র সম্পাদক ও জৈষ্ঠ্য সাংবাদিকদের সাথে। বুধবার (৬ এপ্রিল) সকাল ১১টায় শুরু হওয়া সংলাপে সবার মূল আলোচনায় ঘুরেফিরেই আসে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা। এজন্য রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের আস্থা অর্জন জরুরি বলে মত তাদের।

কারও কারও মত, দলীয় সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা কঠিন। সংলাপে সিইসি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলের। সংবিধান ও আইনের আলোকেই ভোটের আয়োজন করা হবে।

এসময় দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দমতো প্রার্থী নির্বাচিত করতে পারে সেরকম একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী যেন কোনোভাবেই নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।

নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবির তার বক্তব্যে বলেন, যেই সার্চ কমিটির মধ্য দিয়ে আপনারা এসেছেন সেই কমিটিতে মানুষের আস্থা নাই। আস্থা অর্জন করতে হলে আপনাদেরকেই কাজ করতে হবে। আমরা সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি শূন্যের কোটায় চলে গিয়েছিল। সাফল্য-ব্যর্থতা পরের ব্যাপার, মানুষ যাতে বোঝে যে, তারা যেটা পারছে না নির্বাচন কমিশন সেটা চেষ্টা করছে।

দ্য ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজনের জন্য যে দায়িত্ব পালন ও যে ক্ষমতা প্রয়োগ করা দরকার সেগুলো পালন করুন।

সম্পাদকরা বলেন, নির্বাচন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রভাবমুক্ত হওয়া জরুরি। এজন্য ইসির নিজস্ব জনবল বাড়ানোর পরামর্শ তাদের। কেউ কেউ মনে করেন একদিনে ভোটের পদ্ধতি পরিবর্তন করা দরকার। প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, যদি ৬৪ জেলায় একসাথে নির্বাচন না করা যায় সেক্ষেত্রে অবশ্যই ভাগ করে নির্বাচন করা যায়, এবং নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তা দিয়েই এটা করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে আমরা যে সরকারের হস্তক্ষেপের কথা বলি তা অনেকাংশেই কমে যাবে।

নির্বাচনকালীন সরকার ইসির দেখার বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন করবে কমিশন, এক্সিসটিং যে কনস্টিটিউশনাল প্রভিশনগুলো আছে তার অধীনে আইন অনুযায়ী ও সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ীই নির্বাচন পরিচালনা করার দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। আপনারা যে কাজগুলোর কথা বলছেন সেগুলো রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যাপার, এসব ব্যাপারে তারা কী করবেন তা তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

এর আগে সুশীল সমাজ ও শিক্ষাবিদদের সাথে আলোচনায় বসে কমিশন। রাজনৈতিক দলের সাথেও আলোচনা হবে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply