বিশ্বে নারীর অধিকার আদায় করে নিতে নতুন জোটবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এই লক্ষ্য পূরণে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত ‘গ্লোবাল সামিট অন উইমেন’-এ চার দফা প্রস্তাব তুলে ধরেছেন তিনি।
শুক্রবার জমকালো এক অনুষ্ঠানে নারী নেতৃত্বে সফলতার স্বীকৃতি হিসেবে ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’তুলে দেওয়া হয় শেখ হাসিনার হাতে।
সিডনির ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশান সেন্টারে সম্মেলনের সভাপতি আইরিন ন্যাটিভিডাডের হাত থেকে সম্মাননা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি বিশ্বের নারীদের; যারা পরিবর্তনের চেষ্টায় নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়ে চলেছে।”
মিলনায়তনে উপস্থিত নারী অধিকার কর্মী ও বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নারীদের সহায়তায়, তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের নতুন করে জোট বাঁধতে হবে। যার যার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর মূল্যবোধের জায়গায় থেকেই একসঙ্গে কাজ করতে হবে সেই নারীদের জন্য, যাদের সহায়তা দরকার।”
স্বাধীনতার পর থেকে নারীর ক্ষমতায়নে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যে অগ্রগতি হয়েছে, সেসব তথ্য তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, “নারীর ক্ষমতায়নের বাংলাদেশ এখন রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।”
২০১৭ সালের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের ১৪৪টি দেশের মধ্যে এ দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ৪৭তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে ১৫৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম।
বিশ্বের নারীর অধিকার আদায়ের লক্ষ্য পূরণে তিনি চারটি প্রস্তাব এ সম্মেলনে তুলে ধরেন।
প্রথমত: নারীর সক্ষমতা নিয়ে প্রচলিত যে ধারণা সমাজে রয়েছে, তা ভাঙতে হবে।
দ্বিতীয়ত: প্রান্তিক অবস্থানে ঝুঁকির মুখে থাকা সেইসব নারীদের কাছে পৌঁছাতে হবে, যারা আজও কম খাবার পাচ্ছে, যাদের স্কুলে যাওয়া হচ্ছে না, যারা কম মজুরিতে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে এবং সহিংসতার শিকার হচ্ছে। কোনো নারী, কোনো মেয়ে যেন বাদ না পড়ে।
তৃতীয়ত: নারীদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে তাদের সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।
চতুর্থত: জীবন ও জীবিকার সমস্ত ক্ষেত্রে নারীদের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে।
বাংলাদেশসহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নারী শিক্ষার উন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক উদ্যোগে ভূমিকার জন্য শেখ হাসিনাকে এবার এই পুরস্কার দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘গ্লোবাল সামিট অফ উইমেন’।
Leave a reply