বোয়ালমারীর ওসির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলার আবেদন

|

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি:

ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও এক উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলার আবেদন করেছেন এক ব্যবসায়ী। বুধবার (৬ এপ্রিল) ফরিদপুরের ৭ নম্বর আমলি আদালতে এ মামলার আবেদন করেন বোয়ালমারী উপজেলা দাদপুর ইউনিয়নের মোবারকদিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল হক মোল্যার ছেলে ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমান নান্টু।

দায়েরকৃত অভিযোগটি সরেজমিনে তদন্ত করে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তরুণ বাছাড়। আগামী ২৬ মে মামলার আবেদনের ওপর পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগকারী ব্যবসায়ী আতিয়ার রহমান নান্টু ২০০০ সালের ২৩ মে বোয়ালমারীর পৌরসভার ওয়াপদার পাশে মৃত রশিদ মোল্লার স্ত্রী ও চার মেয়ের কাছ থেকে দুটি দলিলে ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। পরে এর ২ শতাংশ জমির ওপর দোকান ঘর তৈরি করে হার্ডওয়ারের ব্যবসা করে আসছিলেন তিনি। একই জমির উপর মালিকানা দাবি করে পৌরসভার সোতাশী গ্রামের ব্যবসায়ী মো. ইয়াকুব হোসেন ও তার ভাই মো. বেলায়েত হোসেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর প্রতিপক্ষ ইয়াকুব হোসেন ও বেলায়েত হোসেন আতিয়ার রহমান নান্টুর গুদাম দখলের চেষ্টা করেন বলে বোয়ালমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নান্টু। সাধারণ ডায়েরি করার পর তিনি থানার ওসির কক্ষে গেলে ওসি তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় তিনি ওসিকে ৫০ হাজার টাকা দেন। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ওই দুই ভাই আবারও তার গুদাম ঘরের তালা ভেঙে সিমেন্টের বস্তা ওঠানোর চেষ্টা করেন। তখন আতিয়ার রহমান বিষয়টি তাৎক্ষণিক ওসিকে জানান। ওই সময় ওসি আবারও ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এবার তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করলে বোয়ালমারী থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুল আলম হুমকি দিয়ে বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে (আতিয়ার রহমানকে) মামলা দিয়ে এলাকাছাড়া করবো। এ সময় আতিয়ার রহমানকে থানার উপ-পরিদর্শক(এসআই) উত্তম কুমার সেন চড়, কিল ও ঘুষি মেরে থানা থেকে বের করে দেন।

এ ঘটনার পরে আতিয়ার রহমান নান্টু ফরিদপুরের পুলিশ সুপার, ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ, মহাপুলিশ পরিদর্শক, বাংলাদেশ পুলিশ হেড কোয়ার্টারে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন স্থানীয়ভাবে ও বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এ বিষয়টির কোনো সুরাহা না হওয়ায় তিনি আদালতে মামলার জন্য এ অভিযোগ করেন।

তবে এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, যে অভিযোগে মামলার আবেদন করা হয়েছে সে অভিযোগ সত্য নয়।

এ বিষয়ে মামলার আবেদনকারী আতিয়ার রহমানের আইনজীবী লুৎফর রহমান বলেন, আতিয়ার রহমান নান্টু আদালতে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের সত্য-মিথ্যা নিশ্চিত হওয়ার জন্য অভিযোগটি যাচাই করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদালত পিবিআইকে তদন্তের ভার দিয়েছেন। পিবিআইয়ের তদন্তে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে অভিযোগটি মামলায় পরিণত হবে, না হলে অভিযোগটি খারিজ হয়ে যাবে।

জেডআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply