পাকিস্তানের রাজনীতিতে নয়া রেকর্ড গড়তে ব্যর্থ ইমরান খান

|

খেলার মাঠে একের পর এক রেকর্ড গড়া ইমরান খান ব্যর্থ হলেন পাকিস্তানের রাজনীতিতে নতুন রেকর্ড গড়তে। অনাস্থা ভোটে তার বিদায়ে অক্ষুন্ন থাকলো পাকিস্তানের অনিশ্চিত রাজনীতির রেকর্ড। দেশটির ৭৫ বছরের ইতিহাসে ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি কোনো প্রধানমন্ত্রী। সামরিক হস্তক্ষেপ, আদালতের সঙ্গে বিরোধ কিংবা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে মেয়াদ পূরণের আগেই বিদায় নিতে হয়েছে দেশটির প্রত্যেক সরকার প্রধানের।

ইমরানও এর ব্যক্তিক্রম নন। তবে তিনিই পাকিস্তানের প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী, যিনি অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। অনাস্থা ভোট ঠেকাতে নানা কৌশল আর ষড়যন্ত্র তত্ত্বের কথা বলেছেন ইমরান খান। তবুও পারলেন না। ৫ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হলেও ক্ষমতা ছাড়তে হলো ৩ বছর ২৩৩ দিনেই। এ পর্যন্ত দেশটির ২২ সরকার প্রধানের মধ্যে ৪ বছর পার করতে পেরেছেন মাত্র দুইজন।

রাজনীতিতে ইমরান খানের ইনিংস শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালে; ক্রিকেট মাঠ ছাড়ার চার বছরের মাথায়। এর ঠিক চার বছর আগে ক্রিকেট বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। দেশকে এনে দেন প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বমঞ্চের শিরোপা।

মূলত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) গঠনের মাধ্যমেই রাজনীতির ইনিংস শুরু করেন তিনি। খেলোয়াড়ি জীবনের মতোই নানান চড়াই উৎরাই তার ২৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে।

২০০২ সালে মিয়াওয়ালি আসন থেকে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য হন ইমরান খান। তবে ২০১৩ এর নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ছিলেন অনেকটা পার্শ্বচরিত্রেই। ওই নির্বাচনে প্রথম জাতীয়ভাবে আলোচনায় আসে পিটিআই। আবির্ভূত হয় তৃতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে।

বছর না গড়াতেই প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের অভিযোগ তোলেন ইমরান। দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে বিদায় হয় নওয়াজের। তখন অভিযোগ উঠে, ইমরানের পেছনে কলকাঠি নাড়ছে সামরিক বাহিনী। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তার দলের সাফল্যের পেছনেও অনেকের আঙুল সেনাবাহিনীর দিকে।

তবে, সামরিক বাহিনীর সাথে সখ্যতা স্থায়ী হয়নি ইমরান খানের। সেইসাথে, অর্থনৈতিক সংকট আর মিত্রদের সাথে বিরোধে অবস্থান দুর্বল হতে শুরু করে তার। যদিও পিটিআই প্রধানের দাবি, পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের কারণেই তার বিরুদ্ধে একাট্টা বিরোধীরা। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষ নেয়ার পর, প্রকাশ্যে পশ্চিমাদের সমালোচনাও করেছেন তিনি।

ইমরানের আগে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হন মাত্র দু’জন প্রধানমন্ত্রী। তবে, দুইবারই সরকার প্রধানদের পক্ষে ফল যায়। অনাস্থা ভোটে জিতে ১৯৮৯ সালে বেনজির ভুট্টো এবং ২০০৬ সালে ক্ষমতায় টিকে যান শওকত আজিজ। সে হিসেবে অনাস্থা ভোটে হেরে নতুন নজির গড়লেন ইমরান খান।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply