রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদাশী ইউপি আওয়ামী লীগ নেতা ও ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোশারফ হোসেন মলমগীর (৫০)-এর মৃত্যু নিয়ে নতুন করে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভাইয়ের স্ত্রী ও তার কথিত নতুন স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মলমগীরের বোন আলেয়া জামান। ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে লাশ উত্তোলনেরও আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে মলমগীরের মৃত্যুর এক মাস পর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন তিনি।
আসামিরা হলেন, মৃত মলমগীরের স্ত্রী যুথি আক্তার ও পরকীয়া প্রেমিক শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের নিমতলা গ্রামের দেলোয়ার শেখের ছেলে মো. আরিফ শেখ।
রহস্যের সূত্রপাত গত শনিবার। সেদিন সন্ধ্যায় আরিফ শেখ মৃত মলমগীরের বাড়িতে আসে তার প্রেমিকা যুথির সাথে দেখা করতে। সে সময় গ্রামবাসীর সন্দেহ হলে তাদের আটক করে এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে বিষয়টি জানায়। ওই সময় উপস্থিত সবার সামনে মৃত মলমগীরের স্ত্রী যুথি জানায় আরিফ শেখ তার স্বামী। আদালতের মাধ্যমে তারা চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেছেন। অর্থাৎ মলমগীরের মৃত্যুর ১৫ দিন আগে যুথি তার প্রথম স্বামী মলমগীরকে তালাক না দিয়েই দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। আর এতেই মলমগীরের স্বাভাবিক (স্ট্রোকজনিত) মৃত্যু সবার কাছে রহস্যময় হয়ে ওঠে। ফলে মলমগীরের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের ধারণা, তার স্ত্রী যুথি এবং পরকীয়া প্রেমিক আরিফ শেখ কৌশলে মলমগীরকে হত্যা করে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, মোশারফ হোসেন মলমগীর গত ১৪ মার্চ মধ্যরাতে স্ট্রোকজনিত কারণে মারা যান। ভোররাতে সেটি জানাজানি হয়। ওই সময় স্বাভাবিক মৃত্যু ভেবে যথাযথ নিয়ম মেনে পরদিন বিকালে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
মামলার বাদী মৃতের বোন আলেয়া জামান জানান, যে নারী স্বামী ও দুটি শিশু রেখে গোপনে বিয়ে করতে পারেন, সে সবই করতে পারে। তার ভাইয়ের মৃত্যু নিয়ে প্রথমে সন্দেহ হলেও মেনে নিয়েছিলেন যে স্ট্রোকজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু যখন যুথির পরকীয়া প্রেমিক তাদের বাড়িতে এসে ধরা পড়েছে এবং জানতে পেরেছেন তার ভাই মৃত্যুর ১৫ দিন আগে গোপনে তারা বিয়ে করেছেন। তখন সন্দেহ সঠিক মনে হয়। আসলে তার ভাইকে কৌশলে হত্যা করে তারা স্ট্রোক বলে চালিয়েছে। সব বুঝে উঠতে দেরি হওয়ায় মামলা করতে দেরি হয়েছে।
বাদীর আইনজীবি এ্যাড. লিয়াকত আলী জানান, রাজবাড়ীর ১নং আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কায়ছুন্নাহার সুরমার আদালতে মামলাটি দাখিল করা হয়েছে। পাশাপাশি ময়নাতদন্ত করতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো আদেশ দেন নাই। তবে আগামীকাল আদেশ হতে পারে।
জেডআই/
Leave a reply