রুশ আগ্রাসনে মানসিকভাবে একেবারেই ভেঙে পড়েছে ইউক্রেনের অনেক শিশু। স্বজন ও ঘরবাড়ি হারিয়ে বিপর্যস্ত তারা। ট্রমাগ্রস্ত এসব শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবীরা। খেলাধুলা, নাচ-গানে অংশ নেয়ার মাধ্যমে মাতিয়ে রাখছে শিশুদের। যুদ্ধের দুঃসহ স্মৃতি কাটিয়ে তুলতে করা হচ্ছে সহায়তা। শিশুদের সাথে কেউ খুনসুটিতে ব্যস্ত, কেউ আবার মেতেছে নাচে গানে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় জাপরিঝজিয়া শহরের শিশুদের এভাবেই যুদ্ধের ভয়াবহ স্মৃতি ভুলিয়ে রাখতে কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবীরা।
মূলত যুদ্ধের সহিংসতা শিশুদের মনে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে তা কাটাতেই চলছে এ কার্যক্রম। ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকা থেকে পালিয়ে আসা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হাজারো শিশুকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। থেরাপি সেন্টারের স্বেচ্ছ্বাসেবী ওলগা পিভতোরাতস্কা বলেন, যুদ্ধ সংঘাত শিশুদের মনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ওরাও উদ্বিগ্ন। কিছু কিছু শিশুর মানসিক পরিস্থিতি খুবই বিপর্যস্ত। তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে সাহায্য করছি আমরা।
শিশু মনস্তত্ত্ববিদ এলিওনা সেরদেউক বলেন, শিশুদের মানসিক ট্রমা থেকে বের করে আনতে আমরা কাজ করছি। যুদ্ধের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে তারা যেন পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে পারে সে চেষ্টাই করা হচ্ছে। এখানে ওদেরকে খেলাধুলা, নাচ-গান, ছবি আঁকার মধ্যে ব্যস্ত রাখছি আমরা।
শিশুদের মনোজগতে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলে যুদ্ধ সংঘাত। এতে বাধাগ্রস্ত হয় মানসিক বিকাশ, হারায় সম্পর্কের দৃঢ়তা। স্বেচ্ছাসেবীরা বলছেন, শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে যত্নশীল না হলে ভয়াবহ এসব স্মৃতি বাধাগ্রস্ত করবে তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে। ইরিনা ছোরনা নামের একজন স্বেচ্ছ্বাসেবী বলেন, অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে আমি যুদ্ধ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। তাই জানি, এমন পরিস্থিতিগুলো অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে পার করা ঠিক কতটা কষ্টকর। আমাদের ফাউন্ডেশন ও স্বেচ্ছ্বাসেবীরা এসব বিপদগ্রস্ত শিশুদের যথাসম্ভব সাহায্য করতে চেষ্টা করছে।
ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ইউক্রেনের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়েছে কমপক্ষে ২৮ লাখ শিশু। আর শরণার্থী হিসেবে অন্য দেশে পাড়ি জমিয়েছে আরও প্রায় ২০ লাখ।
আরও পড়ুন: রুশ হামলার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের কিয়েভ সফর
এম ই/
Leave a reply