মাথাপিছু আয় বাড়লেও বাংলাদেশ এখনও ‘সস্তা শ্রমিকের দেশ’, নেই নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টাও

|

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর্থ-সামাজিক নানাক্ষেত্রে এসেছে সাফল্য। কিন্তু কর্মক্ষেত্র, শ্রমঘণ্টা এবং ন্যায্য মজুরির প্রশ্নে এখনও পিছিয়ে বাংলাদেশ। কাজের জন্য ৮ঘণ্টা নির্দিষ্ট করার ক্ষেত্রে এখনও নেই সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা। বছর ঘুরে আবারও এসেছে মে দিবস। তবে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকারের প্রশ্নের উত্তর কে দেবে?

অর্থনীতির প্রতিটি সূচকের উন্নতি ঘটানোর পেছনেই আছে শ্রমিকের শ্রম-ঘাম। কিন্তু শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিশ্রাম, নিরাপত্তা থেকে বহুদূরে তারা। কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে ১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে রক্ত দেয় বহু শ্রমিক। কিন্তু সেই অধিকার কি নিশ্চিত হয়েছে?

ঝুঁকিপূর্ণ কিংবা কাজের নিশ্চয়তা নেই এমন অপ্রতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন দেশের ৮৫ ভাগ শ্রমিক। সংখ্যায় যা ৫ কোটির বেশি। বিপুল সংখ্যক এসব শ্রমজীবী মানুষের নিশ্চিত হয়নি অধিকার। এ নিয়ে বিলসের পরিচালক কোহিনুর মাহমুদ বলেন, বর্তমানে জাতীয় সর্বনিম্ন মজুরির কোনো মানদণ্ড নেই। শোভোনভাবে বেঁচে থাকার জন্য যে মজুরি দরকার তাও শ্রমিকের নেই। তাই এই দুর্মূল্যের বাজারে তারা খুবই খারাপ অবস্থায় আছে।

এদিকে, ক্রমান্বয়ে বাড়ছে দেশজ উৎপাদন ও মাথাপিছু আয়, বাড়ছে রফতানি আয়ও। তবে, উন্নয়ন যতো বাড়ছে, দেশের সঙ্গে জুড়ে আছে ‘সস্তা শ্রমিকের দেশ’ তকমাও। সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের সর্বনিম্ন মজুরির মানদণ্ড মাত্র ৪৩টি ম্যানুফ্যাকচারিং খাতকে আমরা দিতে পেরেছি। অথচ এর বাইরে আরও প্রায় ১১০টির মতো ম্যানুফ্যাকচারিং খাতই রয়েছে যেগুলোকে আমরা কোনো মানদণ্ডের মধ্যে আনতে পারিনি।

দেশের মোট শ্রমশক্তির ৩৭ শতাংশই নারী। কিন্তু তাদের অনেকে নিগৃহীত হচ্ছেন, শিকার হচ্ছেন বৈষম্যের। ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, একটি শোভোন মজুরি থাকা, নিরাপদ কাজের পরিবেশ থাকা অথবা তার সংগঠন করার ক্ষমতা থাকা এর কোনোটিই হয়তো আমরা নারী শ্রমিকদের দিতে পারছি না।

তাই মে দিবসে প্রত্যাশা, একদিন এসব শ্রমজীবী মানুষের মুখে ফুঁটবে হাসি। নিশ্চিত হবে শ্রমঘণ্টা এবং ন্যায্য মজুরি।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply