শোলাকিয়ায় ঈদগাহে হামলা: ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট

|

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদ জামাতে ছয় বছর আগে যে হামলা হয়েছিল, সেটি জঙ্গি হামলা ছিল না। ওই হামলাটি করা হয়েছিল ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে। ওই মাঠে যিনি ইমামতি করেছিলেন, তার প্রতি কিছু মানুষের ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ থেকেই হামলাটি চালানো হয়। ফলে সেটি কোনো জঙ্গি হামলা ছিল না। সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের এমন বক্তব্য ঘিরে হামলার ঘটনাটি আলোচনায় আসে।

২০১৬ সালে হলি আর্টিজানে হামলার কদিন পরেই শোলাকিয়ায় ঘটে আরেকটি নারকীয় ঘটনা। ৭ জুলাই ঈদের নামাজের ঠিক আগে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে হত্যা করা হয় পুলিশের দুই কনস্টেবলকে। যারা গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা চালায়, ওই নব্য জেএমবির সদস্যরাই শোলাকিয়ায় হামলা চালায় বলে তদন্তে উঠে আসে। জঙ্গিদের সমন্বিত হামলা বলে চার্জশিটও দেয়া হয়। তাহলে কী শোলাকিয়ার হামলাটি জঙ্গি হামলা ছিল না?

ঘটনাস্থল কিশোরগঞ্জ হলেও মূলত পুরো তদন্ত দেখভাল করেছিল কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। পুলিশের এ ইউনিটটির প্রধান যমুনা টেলিভিশনের কাছে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান বলেন, জঙ্গি সংগঠন কর্তৃক হামলা মানেই তো জঙ্গি হামলা। এ ঘটনায় হামলা ঈদগাহর মুসল্লি কিংবা ঈদ জামাতের ওপর নয়; ডিএমপি কমিশনার এটিই বুঝাতে চেয়েছিলেন বলেন দাবি করেন তিনি। পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, তিনি (ডিএমপি কমিশনার) বলেন নাই যে এইটা জঙ্গি হামলা নয়। এই হামলাটি ছিল একজন ব্যক্তিকে টার্গেট করে। তার ওপর হামলার পরিকল্পনা ছিল। তাদের মতাদর্শের বাইরে থাকে, তাদেরই তো তারা টার্গেট করে।

এদিকে, ব্যক্তিকেন্দ্রিক হামলা হলেও সেটা জঙ্গিদের পরিকল্পনার অংশ ছিল বলেই জানায় মূল তদন্ত সংস্থা কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ।

শোলাকিয়ায় হামলার কেটে গেছে প্রায় ৬বছর। হামলায় ২৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়। এরমধ্যে ১৯ জন মারা গেছে বন্দুকযুদ্ধে। জীবিত পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়া হয়। অভিযোগ গঠন হলেও শুরু হয়নি বিচারকাজের মূল প্রক্রিয়া।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক বলেন, করোনার কারণে মামলার বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। নতুন করে আবার শুরু হয়েছে এ মামলার কাজ। এ মামলা প্রমাণ করা আমাদের জন্য সহজতর কাজ।

শোলাকিয়ার লাখো মুসল্লির মনে দাগ কেটে আছে এখনো সেই হামলার ক্ষত। তাই দ্রুত এর বিচারকাজ শেষ করার দাবি কিশোরগঞ্জের মানুষের।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply