আখাউড়ায় প্রকাশ্যে জবাই করে বিক্রি হচ্ছে শিয়ালের মাংস

শিয়ালের কাটা মাথা হাতে হাতে বসে আছে স্থানীয় দুই কিশোর।

আখাউড়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় প্রকাশ্যে শিয়াল জবাই করে মাংস ভাগবাটোয়ারা করেছে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ছতুরা শরীফ গ্রামের কয়েকটি পরিবার। এ সময় কেজি দরে মাংস বিক্রিও করেছে তারা।

মঙ্গলবার (১৭ মে) দুপুরে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের তন্তর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

আখাউড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম খবর পেয়ে ধরখার ফাঁড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই একটি জীবিত শিয়ালকে ফেলে জবাই করে শিয়ালটির মাংস নিয়ে পালিয়ে যায় ওই লোকেরা। তবে এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে না পারলেও দড়িতে বাধা একটি জীবিত শিয়াল উদ্ধার করে সেটিকে জঙ্গলে অবমুক্ত করা হয়।

স্থানীয়দের বরাতে ধরখার ফাঁড়ি থানার এসআই মো. হুমায়ুন কবির যমুনা নিউজকে জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ছতুরা শরীফ গ্রামের জনৈক ব্যক্তির বেগুনক্ষেত থেকে দুটি শিয়াল আটক করা হয়। এ সময় কসবা উপজেলার ভাদুইর গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক আসলাম ও ফোরকান ওই গ্রামের কিছু লোকজন নিয়ে তন্তরবাজার এলাকায় একটি শিয়াল জবাই করে মাংস ভাগবাটোয়ারা ও কিছু মাংস বিক্রি করেন। এ সময় ঘটনাটি পুরো এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই দড়িতে বাঁধা অবস্থায় অপর একটি জীবিত শিয়াল ফেলে রেখে ওরা পালিয়ে যায়। পরে জীবিত শিয়ালটিকে পাশের জঙ্গলে অবমুক্ত করে পুলিশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ক্রেতা বলেন, মাংস বিক্রেতা আসলাম বলেছিল যে বাতের ব্যথা কিংবা অন্যান্য অনেক কঠিন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে শিয়ালের মাংস রান্না করে খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই, এসব ক্ষেত্রে শিয়ালের মাংস অব্যর্থ ওষুধ। তার সে কথা বিশ্বাস করে অনেকেই শিয়ালের মাংস কেনেন। মানুষকে বিশ্বাস করাতে পাশেই রাখা হয়েছিল শিয়ালের কাটা মাথা। অপর জীবিত শিলালটিও জবাইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল তারা। পুলিশের কারণে রক্ষা পায় সেটি।

আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেমানা আক্তার যমুনা নিউজকে বলেন, বন্যপ্রাণী জবাই করে মাংস বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। শিয়াল ও অন্যান্য বন্য প্রাণী প্রকৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

/এসএইচ