ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
স্ত্রী,পুত্রবধূ, নাতিসহ ঝিনাইদহে সুকুমার বাড়ই নামে এক সংখ্যালঘু পরিবারের ৪ সদস্যই গত ৭ দিন ধরে বাড়ি থেকে নিখোঁজ। গত ৪ মে সন্ধ্যা থেকে তারা বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ রয়েছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ আর পরিবারটির সন্ধানের দাবিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সংখ্যালঘু বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সরেজমিনে জানা যায়, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্তপল্লী পার খালকুলা গ্রামের সংখ্যালঘু সুকুমার বাড়ই এর বাড়িতে। বাড়িতে সুকুমার বাড়ইসহ তার স্ত্রী রেনু রাণী, পুত্রবধূ নীলা বাড়ই ও নাতি সনথ বাড়ই থাকতেন। ছেলে স্বপন বাড়ই অসুস্থ হলে কিছু জমি বিক্রি করে চিকিৎসা খরচ চালান এবং ৫ মাস আগে মারা গেলে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। এলাকার প্রভাবশালীদের হুমকি আর জোর করে জমাজমি লিখে নেয়ার ভয়ভীতি প্রদর্শনের ফলে পরিবারটি নিরুদ্দেশ হয়েছে বলে মনে করছে এলাকাবাসী।
আর পুলিশও জানিয়েছে জমি-জমা জোর করে লিখে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শনের কারণেই পরিবারটি হয়তো আত্মগোপন করেছে, এসব ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ না পেলেও বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখার আশ্বাস পুলিশের।
ওয়ার্ড মেম্বরের স্বামী আব্বাস হোসেন জানান, ঘরের জানালা খোলা, বাল্ব জ্বলছে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দুটি পাসপোর্ট, গোয়াল ঘরে গরু বাঁধা, উঠানে হাঁস-মুরগি ঘুরে বেড়াচ্ছে, সবই আছে অথচ নেই বাড়ির মানুষগুলি। সুকুমার বাড়ই ও তার পরিবারের ৪ সদস্যই গত ৭ দিন ধরে এভাবে নিরুদ্দেশ । আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী কেউই জানেন না তাদের খোঁজ।
কালীগঞ্জ হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কুমার অধিকারী, সুকুমার বাড়ই এর বাড়ির পাশে পৌনে ৫ বিঘা দাগের একটি জমি সহ বেশকিছু জমাজমি রয়েছে তার। এসব জমি জোরপূর্বক নিতে এলাকার শহিদ শিকদারসহ কয়েকজনের হুমকির কারণে সে ঘর-বাড়ি ছেড়েছে বলে জানায় স্থানীয়দের অনেকে। উদ্বেগ আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন তিনি।
ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পুজাঁ উদযাপন পরিষদ কমিটির সভাপতি কনক কান্তি দাস জানান, কোন না কোন মহলের নজর পড়েছে সুকুমারের জমির প্রতি এবং তাকে ভীত সন্ত্রস্ত করেছে ফলে সে নিরুদ্দেশ হয়েছে তবে বাড়িতে পাসপোর্ট রয়েছে ফলে সে ইন্ডিয়া যায়নি বলে মনে করছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, তাকে দ্রুত উদ্ধার ও হুমকিদাতাদের শাস্তি দাবি করেন।
ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কনক কুমার দাস জানান, জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে কে বা কারা তাকে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছে বলে পুলিশ মনে করছে। এসব ঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ এখনো না আসলেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
Leave a reply