রাখাইনে সেনা নিপীড়ন বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বেশ কয়েকটি দেশের নেতৃবৃন্দ। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তুরস্ক, নাইজেরিয়া, আফগানিস্তানসহ বেশ কয়েকটি দেশের সরকার প্রধান এ আহ্বান জানান। এদিকে, এক সাক্ষাৎকারে এ ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাদের প্রশিক্ষণ সহায়তা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।
জাতিসংঘের ৭২ তম অধিবেশেন শুরু হয় বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার রাতে। এজেন্ডায় না থাকলেও বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধানের বক্তব্যে উঠে আসে রাখাইনে সেনা নিপীড়ন ইস্যু। রোহিঙ্গা নিপীড়ন দ্রুত বন্ধের আহ্বান জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান।
এরদোগান বলেন, রাখাইনে যা হচ্ছে তা নিয়ে পুরো বিশ্ব মর্মাহত। সেনারা নির্বিচারে হামলা ও ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ায় পালাতে বাধ্য হচ্ছে রোহিঙ্গারা। এতো বিপুল শরণার্থীর আশ্রয় ও সহায়তার ব্যবস্থা করা বাংলাদেশের জন্যও কষ্টকর। সহিংসতা বন্ধে দ্রুত এগিয়ে আসতে হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে।
অধিবেশেনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের নেত্রী সু চি’র নিরব ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান ছিল নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের কণ্ঠেও।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বলেন, রাখাইনে জাতিগত নিধনের ঘটনায় স্তম্ভিত বিশ্ব। এক্ষেত্রে সু চি’র নীরবতায় হতাশ আমরা। আশা করবো ক্ষমতা নয় বরং মানবতার জয় হবে।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদু বুহারি বলেন, মিয়ানমারের হত্যাযজ্ঞ বসনিয়া ও রুয়ান্ডার গণহত্যার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। এ ইস্যুতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা কাম্য নয়। অবিলম্বে হত্যা বন্ধ এবং পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চাপ দিতে হবে মিয়ানমারকে।
অধিবেশেনর প্রথম দিনে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন ৩৫ রাষ্ট্রের প্রধান। প্রায় ৪৩ মিনিট কথা বললেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে ‘টু’ শব্দটি করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিরব ছিলেন ফরাসী প্রেসিডেন্টও। অবশ্য উদ্বোধনী ভাষণে সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রাখাইনে সেনা অভিযান বন্ধের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান মিয়ানমারের প্রতি।
এদিকে, রোহিঙ্গা নিপীড়নের কারণে মিয়ানমারের সমালোচনা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। এক সাক্ষাৎকারে মিয়ানমারে সেনাদের প্রশিক্ষণ সহায়তা আপাতত স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
থেরেসা মে বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের কারণে দেশটিতে সেনাদের জন্য সামরিক সহায়তা আপাতত স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দ্রুত এ সংকট মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিতে হবে দেশটির সরকারকে। সহিংসতা বন্ধে সু চিকে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply